ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

এবার এনবিআরের আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ০৫:২৬ পিএম
গত মাসে এনবিআরে সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে দুদক জানিয়েছে, এবার এনবিআরের এক কমিশনারসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে।

তারা হলেন: ঢাকা পূর্বের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার কাজী মো. জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল স্থলবন্দরের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, উপ-কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা এবং কর অঞ্চল-২-এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ।

দুদক জানায়, এনবিআরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ে দুর্নীতিতে জড়িত। তারা মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দিচ্ছেন করদাতাদের। আবার ঘুষ না পেয়ে কোনো কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগও উঠেছে। এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে।

দুর্নীতির অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, তাদের অধিকাংশই ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ নামে সংগঠিত হয়ে গত মাসে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করেছেন। আন্দোলনের মুখপাত্র ছিলেন সেহেলা সিদ্দিকা।

এর আগে গতকাল বুধবার (০২ জুন) পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের মধ্যে রয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুতফুল আজীম, সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, উপ-কর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাছান।

এছাড়া ২৯ জুন এনবিআরের আরও ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হয়। তারা হলেন, এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার এবং অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু।

উল্লেখ্য, সরকার চলতি বছরের ১২ মে মধ্যরাতে অধ্যাদেশ জারি করে এনবিআর বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে ঐক্য পরিষদ এক সপ্তাহের কর্মসূচি পালন করে, যার মধ্যে ছিল ‘মার্চ টু এনবিআর’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’।

পরে ২৫ মে সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত হচ্ছে না। বরং এটি সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগ হিসেবে আরও শক্তিশালী করা হবে। ফলে ২৯ জুন ঐক্য পরিষদ আন্দোলন প্রত্যাহার করে।

তবে আন্দোলন প্রত্যাহারের পরও কর্মকর্তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে অনড় থাকেন এবং তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। পরে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় তিনি পুনরায় অফিসে যোগ দেন।