ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই একটি গণহত্যা চলছে, এটি একটি লাইভস্ট্রিমড গণহত্যা।’ সোমবার (৬ অক্টোবর) গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে পৌঁছান সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। এথেন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেটাসহ অন্য অধিকারকর্মীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তাদের সমর্থকেরা। সেখানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে থুনবার্গ জানান, তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং আসল গল্প হলো অন্য কিছু।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আটক অবস্থায় কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা নিয়ে আমি অনেক কিছু বলতে পারি, বিশ্বাস করুন। কিন্তু সেটাই আসল গল্প নয়। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই: আমাদের চোখের সামনেই একটি গণহত্যা চলছে, এটি একটি লাইভস্ট্রিমড গণহত্যা। আজ কেউ এই অজুহাত দিতে পারবে না যে তারা জানত না কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ বলতে পারবে না আমরা জানতাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কখনো বুঝতে পারব না মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লাখ লাখ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে—যারা বছরের পর বছর অবরোধ, নিপীড়ন ও বর্ণবৈষম্যের মধ্যে বন্দি।’
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে থুনবার্গ বলেন, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক সংহতির প্রতীক’। গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে দাবি করে থুনবার্গ বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদের যেভাবে আটক করেছে, তা আসলে আমাদের সরকারগুলোর কর্মকাণ্ডের সরাসরি ফল।’ এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল গণহত্যা থেকে কোনো দায়মুক্তি পেতে পারে না।’
প্রসঙ্গত ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ৪০টিরও বেশি নৌযানের একটি বহর নিয়ে গাজায় যাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। আটক এসব অধিকারকর্মীর মধ্যে সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরও ১৭১ জনকে ইসরায়েল ফেরত পাঠিয়েছে। এর আগের তিন দিনে বিভিন্ন দেশের ১৭০ জন অধিকারকর্মীকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ইসরায়েলের বন্দিদশায় কীভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, সেই কথা জানিয়েছেন তারা।