অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা সংকট, যুব উন্নয়ন, মৎস্য এবং শিক্ষা ও খেলাধুলা খাতে জাপানের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরার সঙ্গে বৈঠকে এসব আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাপান সবসময়ই বাংলাদেশের এক বিশ্বস্ত বন্ধু। আমি সম্প্রতি জাপান সফর করেছি এবং সেখানে যে আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা পেয়েছি, তা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।’
বৈঠকে মাতারবাড়ি প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। আমরা সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগোতে চাই, সে জন্য জাইকার সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক তরুণ জাপানে পড়াশোনা ও কাজ করতে চায়। কিন্তু ভাষা বড় বাধা। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, জাপানি ভাষা ও কর্মস্থলের আচরণ শেখাতে শিক্ষকরা বাংলাদেশে এসে বা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।’
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার তরুণ কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে বেড়ে উঠছে কোনো ভবিষ্যতের আশা ছাড়াই। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। এই সংকট দ্রুত সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দরকার।’
জবাবে জাইকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরা বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের এশীয় অঞ্চলের অন্যতম প্রধান অংশীদার। আমরা বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারে সহযোগিতা করছি এবং আইসিটি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণে জাপান ইতোমধ্যেই অনেক দেশে স্বেচ্ছাসেবক পাঠাচ্ছে। বাংলাদেশে এ সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।’
যুব উন্নয়ন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের নারী খেলোয়াড়দের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়মিত জয় পাচ্ছে। গতকাল তারা আরেকটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে। আমরা হোস্টেল সুবিধা বাড়ালেও আরও সহায়তা প্রয়োজন।’
এ সময় তিনি জাপানের অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং জাইকার উন্নয়ন সহায়তার (ওডিএ) সীমা ৩০০ বিলিয়ন ইয়েন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন ইয়েনে বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।
অর্থনৈতিক সংস্কার, রেলপথ নির্মাণ এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ ও অনুদানচুক্তির জন্যও জাপানকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
আপনার মতামত লিখুন :