বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ইউএনবি

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম

ডাকসু নির্বাচনে সাইবার হুমকি, নারী প্রার্থীরা প্রধান লক্ষ্য

ইউএনবি

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র নির্বাচন (ডাকসু) সামনে রেখে পুরো দেশেই যেন একটা নির্বাচনি হওয়া বইছে। প্রতিদিন খবরের কাগজের প্রধান শিরোনাম হচ্ছে এই নির্বাচন। সামাজিক মাধ্যমের সুবাদে ডাকসু প্রার্থীদের খবরা-খবর ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশের প্রান্তিক কোনো চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রবাসীদের কাছেও।

কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনার বাইরে সামাজিক মাধ্যমে অনিরাপদ হয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। সাইবার জগতে ক্রমাগত হেনস্তা, অপতথ্য ও গুজবের শিকার হচ্ছেন তারা। এতে প্রধান লক্ষ্য আলোচিত নারী প্রার্থীরা। প্রার্থীদের লক্ষ্য করে চলছে ট্যাগিং, বডি শেমিং, বুলিং, গুজব, কটুক্তি, বিদ্বেষমূলক প্রচার, প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোসহ নানা ধরনের সাইবার অপরাধ।

এ ছাড়াও সাইবার হামলার মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সংগঠনের পেইজ, ‘বট বাহিনী’র উপদ্রবও চলছে ভয়াবহভাবে।

প্রধান লক্ষ্য নারী প্রার্থীরা

ডাকসু নির্বাচনে এবার নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণ ২০১৯ সালের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। এমনকি এবারের ঘোষিত ৯টি প্যানেলের মধ্যে ৫টিতেই নেতৃত্ব দেবেন নারী। ভিপি পদে লড়ছেন দুজন নারী, জিএস পদে একজন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়ছেন আরও দুজন নারী।

এ ছাড়াও বিভিন্ন প্যানেলের সম্পাদক ও সদস্য পদে রয়েছেন একাধিক নারী প্রার্থী, এরই মধ্যে তারা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে গেছেন। তবে নারী প্রার্থীদের লক্ষ্য করে বডি শেমিং, বুলিঙের অহরহ ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ডাকসু নির্বাচনে সবার আগে প্রার্থিতার ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাবেক এই মুখপাত্রের বিরুদ্ধে এরপর থেকেই গুজব ও অপতথ্যের হিড়িক পড়ে। তিনি কবি সুফিয়া কামাল হলে বাম রাজনীতি বাদে সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান বলে গুজব ছড়ানো হয়। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিজের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন উমামা।

তিনি বলেন, ‘প্রভোস্ট স্যারের কাছে জমা দেওয়া বিবৃতিতে আমরা সুফিয়া কামাল হলে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে লিখে দিয়েছি। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ (বাগছাস) ইত্যাদি, মানে যাবতীয় বাম, ডান, ইসলামিক সব দলের রাজনীতি হলে বন্ধ থাকবে।’

এ ছাড়াও উমামার শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে যেমন পোস্ট দেওয়া হচ্ছে, তেমনই মন্তব্যের ঘরেও কটূক্তি করা হচ্ছে। এদিকে ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে এবার ডাকসু নির্বাচন করবেন ৪ নারী। প্যানেল ঘোষণার পর থেকেই শিবিরের নারী প্রার্থীরা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভিপি পদপ্রার্থী আবু সাদিক কায়েম।

নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, এবারের ডাকসুতে রাজনৈতিক বলয়ের বাইরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী প্রার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে, রাজনীতি কিংবা রাজনীতির বাইরে ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ এখনো গড়ে উঠেনি। অব্যাহত কটূক্তি, প্রোপাগান্ডা, বিদ্বেষমূলক প্রচার, সাইবার বুলিং ও ট্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন নারীরা।

সাদিক কায়েম বলেন, ফাতিমা তাসনিম জুমা, সাবিকুন্নাহার তামান্না, উম্মে ছালমা থেকে ডান-বাম ঘরানার কেউই রেহাই পাচ্ছেন না এই ব্যাধি থেকে। এই অব্যাহত অপপ্রচারের ফলে অনেক নারী শিক্ষার্থী এখনও রাজনীতিতে ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

‘তাদের সাহসী অবদান ও দুর্নিবার নেতৃত্ব আমাদের বিজয়কে তরান্বিত করেছে। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নারীরা কখনোই যথাযথভাবে অংশগ্রহণের উদ্দীপনা পাননি’ বলেন সাদিক।

এ ছাড়াও বিভিন্ন পদে প্রার্থীতার ঘোষণা করা নারীদেরও ক্রমাগত সাইবার অপরাধের মুখে পড়তে হচ্ছে।

ছড়ানো হচ্ছে হরেক রকম গুজব

ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছড়ানো হচ্ছে নানারকম গুজব। প্রার্থীদের রাজনৈতিক মতাদর্শসহ ব্যক্তিগত জীবনও রেহাই পাচ্ছে না এসব অপতথ্য থেকে। ডাকসু অন্যতম আলোচিত মুখ ছাত্রদল থেকে ভিপি পদপ্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বেশ কয়েকটি গুজব ছড়িয়েছে। একটি পোস্টে বলা হয়, তামিরুল মিল্লাত থেকে পড়া আবিদুল ইসলাম শিবিরের সাথী ছিলেন।

একটি টকশোতে এই গুজবের স্পষ্ট বিরোধিতা করেছেন আবিদ। পৃথক আরেক টকশোতে তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি পরিবার থেকে বেড়ে উঠেছি, যার পরিবারের কেউ কখনো রাজনীতিবিদ ছিল না। আমি প্রথম বর্ষে গণরুম, গেস্টরুমের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হল থেকে বেরিয়ে যাই। এরপর নিজ প্রচেষ্টায় ছাত্রদলের রাজনীতিতে যোগদান করি।’

আবিদ অপপ্রচারে অভিযুক্ত করেছেন শিবিরকে। তিনি বলেন, ভিন্ন সংগঠনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে শিবির এখন অপপ্রচারে নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কথা দিয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের সেই নিয়ন্ত্রণ নেই।

এদিকে, ট্যাগিং থেকে বাদ যাচ্ছেন না শিবিরসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। এরইমধ্যে বেশ কয়েকবার শিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ও জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদকে ছাত্রলীগ বলে ট্যাগিং করা হয়েছে।

মুহুর্মুহু বট অ্যাটাক

সামাজিক মাধ্যমগুলো মেতে উঠেছে ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা পোস্টে। তবে পিছিয়ে নেই বট বাহিনী। এসব বট অ্যাকাউন্টের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না কেউ। সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে উল্টাপাল্ট প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যের ঘরে বট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।

বট কী?

বট হলো ‘রোবট’ শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা নিজে নিজেই ইন্টারনেটে পুনরাবৃত্তিমূলক পোস্ট করা, মন্তব্য করা, শেয়ার ও রিঅ্যাক্ট দেয়। বট রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে ট্রল, গুজব বা প্রচারণা ছড়ানো, হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করানো, প্রতিপক্ষকে হেয় করা, মিথ্যা তথ্য ভাইরাল করানোয় কাজে লাগে।

হাজার হাজার ভুয়া বা ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে এসব বটের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দ্রুত ছড়ানো, গণমাধ্যম ও জনমতকে প্রভাবিত করে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী সংসদ-১,২-এ বট আক্রমণ চলছে। এ ছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ, গ্রুপ ও নিউজফিডে বট আক্রমণের শিকার হচ্ছেন প্রার্থীরা।

প্রার্থীদের হেয় করতে বটদের দিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব প্রোপাগান্ডার কারণে প্রার্থীরা হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন, এমনকি হুমকি-ধমকি পর্যন্ত পাচ্ছেন।

সূত্র অনুযায়ী, এরইমধ্যে সাইবার অ্যাটাক চালিয়ে সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের পেজ হামলা চালিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থীদের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এরইমধ্যে আমরা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!