তিস্তা মহাপরিকল্পনার ডিজাইন চূড়ান্তের পর চুক্তি হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তার বাম তীর পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সরকার তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে ২০১১ সাল থেকেই কাজ করে আসছে। তবে এখনও সেটি স্বাক্ষরিত হয়নি, প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তিস্তা যেহেতু আমাদের নদী, ভাটির দেশের জনগণ হিসেবে এ নদীর উপর আমাদেরও অধিকার আছে। এই অধিকার রক্ষা ও জনপদ, জনগোষ্ঠী এবং দেশের স্বার্থে কীভাবে নদীটিকে টিকিয়ে রাখা যায় সেটাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’
তিনি জানান, ২০১৬ সালে চীন সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়, যার ভিত্তিতে একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিল চীন। তবে তা বাস্তব রূপ পায়নি। এরপর দেশের জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিস্তা নিয়ে একটি ‘মহাপরিকল্পনা’ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই পরিকল্পনা যেন একতরফা সরকারি সিদ্ধান্ত না হয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয় সে লক্ষ্যেই তিস্তা তীরবর্তী পাঁচটি স্থানে গণশুনানি করেছি।’
তিনি আরও জানান, গণশুনানিগুলোতে ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। মানুষজন পরিকল্পনার খসড়া শুনে মতামত দিয়েছে। সেই মতামত অন্তর্ভুক্ত করে পরিকল্পনাটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। ডিজাইন চূড়ান্ত করতে অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর আমরা জানতে পারব, প্রকল্পে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে, কবে কাজ শুরু করা যাবে—সেসব বিষয়ে চীন সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি শুরু হবে। আশা করি, এরপর একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হবে।’
তবে সাংবাদিকরা নির্বাচন ও মব প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমি যে বিষয় নিয়ে এসেছি, সে বিষয়েই কথা বলব।’
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা. নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন রিজওয়ানা হাসান। তিস্তা নদীভাঙন রোধে কাজের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও মতবিনিময় করেন তিনি।