ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

পে-স্কেল বাস্তবায়নে বাতিল হবে কিছু সুবিধা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
বাংলাদেশ সরকারের লোগো।

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত নতুন পে-স্কেল প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের শুরুতে চলতি বছরেই এই পে-স্কেল ঘোষণা হতে পারে। এতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বর্তমান বেতনের তুলনায় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংবাদে খুশি দেশের সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে সেইসঙ্গে দুঃসংবাদও রয়েছে। কারণ এই পে-স্কেল বাস্তবায়ন হলে সরকারি চাকরিজীবীদের কিছু সুবিধাও বাতিল হতে পারে।

জানা গেছে, পে-স্কেল বাস্তবায়ন হলে শুধু বেতন নয়, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পদোন্নতিসহ নানা ভাতায় বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। প্রস্তাবে ‘সাকল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক’ নামে একটি বিকল্প বেতন কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে, যেখানে বর্তমান কাঠামোর কোনো ভাতা বা আর্থিক ও অনার্থিক সুবিধা থাকবে না। এই প্রস্তাবিত কাঠামো ইতোমধ্যে অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে চালু রয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন কমিটির সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে সরকারি কর্মচারীরা যে সম্মানী বা ভাতা নিচ্ছেন, তা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কর্মকর্তারা নিজ নিজ পদের দায়িত্ব পালনের জন্য আলাদাভাবে এই সম্মানী নিচ্ছেন। ফলে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই সুবিধা বাতিলের প্রস্তাবও কমিশনের কাছে দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি পে-কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে, তা সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। ডিসেম্বরে চলতি বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু হবে। পে-কমিশনের গেজেট প্রকাশের ওপর এ বাস্তবায়ন নির্ভর করবে। তবে আগামী বছরের শুরুতে এটি কার্যকর হতে পারে।

বেতন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন স্কেলে মূল বেতন দ্বিগুণ হতে পারে। এই ইঙ্গিত বাস্তবায়িত হলে বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী প্রথম গ্রেডের সর্বোচ্চ মূল বেতন দাঁড়াবে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এবং ২০তম গ্রেডের সর্বনিম্ন বেতন হবে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।

কমিশন মনে করছে, বিদ্যমান ২০টি গ্রেড থেকে সংখ্যা কমানো হলে নিম্নতম বেতন আরও কিছুটা বাড়তে পারে। বর্তমানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত প্রায় ১০:১, যা নতুন কাঠামোতেও ৮:১ থেকে ১০:১-এর মধ্যে রাখার বিষয়ে কমিশন পর্যালোচনা করছে।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়। ওই স্কেলের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তখন সর্বোচ্চ গ্রেড-১ এ মূল বেতন ১৯৫ শতাংশ (৪০ হাজার থেকে ৭৮ হাজার টাকা) বাড়ানো হয়। আর সর্বনিম্ন বেতনের ক্ষেত্রে ২০১ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৪ হাজার থেকে করা হয় ৮ হাজার ২৫০ টাকা।