রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিমানের রক্ষণাবেক্ষণে কোনোপ্রকার গাফিলতি বা ছাড় দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। তিনি বলেন, তথ্য লুকানোর কোনো সুযোগ নেই। সবাই দেশের মানুষ।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের কুর্মিটোলা ঘাঁটির এ কে খন্দকার প্যারেড গ্রাউন্ডে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের ফিউনারেল প্যারেড শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এয়ার চিফ মার্শাল বলেন, ‘বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হয় না। প্রশ্ন উঠেছে পুরোনো বিমানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল কি না—আসলে একটি বিমানের আয়ুষ্কাল প্রায় ৩০ বছর। আমরা যেসব দেশ থেকে বিমান সংগ্রহ করি, তারা আমাদের সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাও দিয়ে থাকে। সত্যি বলতে, বিমানটি পুরোনো ছিল না, প্রযুক্তি কিছুটা পুরোনো হতে পারে, তবে সেটিরও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, এই দুর্ঘটনায় বিমানে কোনো কারিগরি ত্রুটি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের রাষ্ট্রীয় ফিউনারেল প্যারেড। এতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সে এই অকুতোভয় পাইলটের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ উপস্থিত সকলে।
পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে প্যারেড গ্রাউন্ড। প্যারেড শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।
জানাজার পর দুপুরেই তৌকিরের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় তার নিজ শহর রাজশাহীতে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ৩১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও অন্তত ১৬৫ জন।