ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটের ১৯ ফ্রিজসহ বিপুল সামগ্রী উঠছে নিলামে

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
বেনজীর আহমেদ ও গুলশান-১-এর র‌্যাংকন আইকন টাওয়ার। ছবি- সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ বিলাসবহুল সামগ্রী নিলামে তোলার প্রস্তুতি শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার গুলশানের র‍্যানকন টাওয়ারে অবস্থিত তার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট থেকে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের নির্দেশে ইতোমধ্যে একটি নিলাম কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসব সামগ্রী নিলামে তোলা হবে।

নিলামের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা তালিকায় ২৪৬টি আইটেম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা দেখে নিলাম কমিটির সদস্যরাও বিস্মিত। তাদের মতে, এটি যেন আশির দশকের দুর্নীতিগ্রস্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস ও তার স্ত্রী ইমেলদার সম্পদকাণ্ডের প্রতিচ্ছবি।

শুধু একটি ফ্ল্যাটেই পাওয়া গেছে: টি-শার্ট ৭২২টি, শাড়ি ৪৯৪টি, সালোয়ার-কামিজ ৪৯৬টি, প্যান্ট ২৬৬টি, পাঞ্জাবি ২২৪টি, লেডিস টপস ৬২২টি, জুতা ও স্যান্ডেল ১৬১ জোড়া, লেডিস ব্যাগ ৭৫টি, সানগ্লাস ৩৪টি, শীতের জামা ১৩২টি, ট্রাউজার ৬৭টি, লেহেঙ্গা ১৬টি, বেডশিট ১০৯টি, নাইট ড্রেস ৫৮টি এবং ওড়না ৩৪৭টি।

এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য হলো, ফ্ল্যাটজুড়ে ১৯টি ফ্রিজ ও প্রায় ১০০ টন ক্ষমতার এয়ার কন্ডিশনার (এসি) রয়েছে। প্রতিটি রুমেই রয়েছে বিলাসবহুল আসবাব ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী। মাস্টার বেডরুম, থিয়েটার রুম, ড্রয়িংরুম, বৈঠকখানা ও কিচেন সবকিছুতেই আধুনিক সুবিধা সংবলিত ব্যবস্থাপনা ছিল।

তবে এই প্রাথমিক নিলামের তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে খাট, ডাইনিং টেবিল, আলমারি, সোফাসেট, ওয়ার্ডরোবসহ বেশকিছু মূল্যবান আসবাব। এগুলোর ব্যাপারে আদালতের ভবিষ্যৎ নির্দেশনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নিলাম তদারকির জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালককে। কমিটিতে রয়েছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন প্রতিনিধি, বস্ত্র অধিদপ্তর ও ইস্পাত প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এবং দুদকের উপপরিচালক সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সরকার পরিবর্তনের পূর্বে ২০২৪ সালের ৪ মে বেনজীর আহমেদ মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে স্ত্রী ও কন্যাসহ গোপনে দেশ ছেড়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশত্যাগের সময় তিনি স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ টাকা সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। দুদক ইতোমধ্যে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।