ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫

তথ্য ও মানবাধিকার কমিশন গঠনে উদ্যোগ না নেওয়ায় উদ্বেগ টিআইবির

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশন গঠনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)

বুধবার (২৩ জুলাই) টিআইবির পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে অবিলম্বে কমিশন দুটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে টিআইবি বলেছে, এই দুই প্রতিষ্ঠানের শূন্যতা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সরকারের অবহেলার একটি অগ্রহণযোগ্য উদাহরণ। এতে করে সরকারের জন্য বিব্রতকর রেকর্ড হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠন সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। অথচ দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের কাছাকাছি সময় পার হয়ে গেলেও কমিশন দুটি গঠনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। কেন দীর্ঘকাল যাবত তা গঠিত হচ্ছে না তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যাও নেই। কমিশন দুটি অতীতে যত অকার্যকরতারই পরিচয় দিক, প্রায় এক বছর নেতৃত্বশূন্য রাখার বিব্রতকর রেকর্ড স্থাপনের পাশাপাশি সরকার তার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও মানবাধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতির প্রতি নির্বিকার অবহেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন নেতৃত্বহীন অবস্থায় রাখা শুধু দুঃখজনক নয়, রাষ্ট্রসংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য ম্যান্ডেটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তিনি বলেন, কমিশন দুটি অতীতে যতই দুর্বলভাবে পরিচালিত হয়ে থাকুক না কেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে নেতৃত্বশূন্য রাখা দেশের জনগণের তথ্যে প্রবেশাধিকারের মৌলিক অধিকার এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের উদাসীনতা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

ড. জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় এক বছর তথ্য কমিশন না থাকা শুধু প্রশাসনিক শূন্যতা নয়, বরং তথ্যপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকারকে অস্বীকার করার নামান্তর। সরকারি তথ্য না পাওয়ার ক্ষেত্রে আপিল করার বা প্রতিকার পাওয়ার যে পথ সংবিধান স্বীকৃত করেছে, তা এখন বন্ধ হয়ে আছে। এমনকি কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলেও এত দীর্ঘ শূন্যতা দেখা যায়নি। এই উদাসীনতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি তার মেয়াদে তথ্য-প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি রাখতে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষের প্রতিকার পাওয়ার পথ বন্ধ করেই রাখতে চায়?

মানবাধিকার কমিশনের বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, গত নভেম্বর থেকে মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়নি। অথচ জাতিসংঘ বাংলাদেশে মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়ায় আছে। এই অবস্থায় নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন না থাকা দ্বিচারিতার পরিচায়ক। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কমিশন গঠন বাধ্যতামূলক, অথচ সরকারের এই ব্যর্থতা তার সদিচ্ছার বিপরীত ইঙ্গিত দেয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির পক্ষ থেকে গণতন্ত্র, সুশাসন, তথ্য প্রকাশ ও মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি প্রতিপালনে অবিলম্বে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে, উভয় কমিশনের কার্যক্রমকে স্বাধীন, দক্ষ ও জনগণের আস্থাযোগ্য করার লক্ষ্যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানানো হয়।