ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক সিনিয়র সচিব এ জেড এম শামসুল আলম আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ২টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
১৯৩৭ সালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার আদ্রা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শামসুল আলম। তাঁর পিতা ছিলেন মরহুম আব্দুল গফুর চৌধুরী।
তিনি ১৯৫২ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) ও ১৯৫৮ সালে এমএ সম্পন্ন করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকসে আরেকটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ঢাকা কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেন।
সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পর ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি এসডিও, এডিসি, উপসচিব, যুগ্মসচিব ও সচিব পর্যায়ের মোট ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন।
তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বকোষ প্রকল্প, ইমাম প্রশিক্ষণ প্রকল্প, মসজিদ পাঠাগার প্রকল্পসহ অনেক যুগান্তকারী প্রকল্প চালু করেন।
তিনি একশটিরও বেশি ইসলামি বই, গবেষণাপত্র এবং সময়োপযোগী বিশ্লেষণমূলক রচনা লিখেছেন। ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা, ইনস্যুরেন্স ও সমাজনীতি নিয়ে তার গবেষণা ও লেখালেখি ইসলামী চিন্তাধারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি ইসলামি একাডেমি, বাংলা একাডেমি, নজরুল একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, মসজিদ সোসাইটি বাংলাদেশের আজীবন সদস্য ছিলেন এবং দেশের বহু ইসলামিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
জীবদ্দশায় তিনি ৪২টি দেশ ভ্রমণ করেন এবং অসংখ্য আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আজ বাদ জোহর, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর মৃত্যুতে দেশের ইসলামি জ্ঞানভিত্তিক সমাজে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।