রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৭:০১ পিএম

গাজার নামে তহবিল সংগ্রহ, বাংলাদেশ থেকে আদৌ ত্রাণ পৌঁছায়?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৭:০১ পিএম

গাজার ক্ষুধার্ত শিশুরা। ছবি- সংগৃহীত

গাজার ক্ষুধার্ত শিশুরা। ছবি- সংগৃহীত

কট্টর ইহুদিবাদী ‘ইসরায়েল’-এর আগ্রসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে স্বাধীন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম খোলা কারাগার হিসেবে পরিচিত গাজা নগরী। টানা ২১ মাসের ‘ইসরায়েলি’ সামরিক তাণ্ডবে প্রায় লক্ষ ফিলিস্তিনি নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়েছে। হত্যাযজ্ঞের শিকার অধিকাংশিই শিশু ও নারী। অবরুদ্ধ গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ। ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশও নিষেধ, এমনকি জাতিসংঘের ত্রাণও। তীব্র সংকট পানি-ওষুধের।

এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানে নগদ অর্থ ও ত্রাণ সংগ্রহ চলছে বাংলাদেশে। দীর্ঘদিন ধরে চললেও সম্প্রতি এই তৎপরতা আরও জোরালো হয়েছে। নগদ অর্থ তুলছে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারা বলছেন, এই অর্থ গাজাবাসীকে সহায়তা করার জন্য।

ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষ বিনা প্রশ্নেই নিজেদের অর্থ দিয়ে দিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ থেকে সহায়তার নামে উত্তোলিত এ ‘সাহায্য’ গাজায় আদৌ পৌঁছাচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

জানা গেছে, গাজায় নগদ অর্থ বা ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এ ধরনের অনুমোদন নেয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এতে অবৈধ হুন্ডি পথে অর্থ পাঠানোর শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

বাংলাদেশে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসও গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ ও নগদ সহায়তা সংগ্রহ করছে। ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে দূতাবাসের মাধ্যমে সংগৃহীত এই সহায়তা কতটা গাজায় পৌঁছাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেছেন, ‘গাজা এখন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও অবরুদ্ধ। জাতিসংঘের ত্রাণও সেখানে পৌঁছাতে পারছে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পৌঁছানোও সম্ভব নয়।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানও একই কথা জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রথম দিন থেকেই আমরা বলেছি, গাজার নামে তহবিল সংগ্রহ অগ্রহণযোগ্য। বর্তমানে সেখানে ১০ শতাংশ ত্রাণও প্রবেশ সম্ভব নয়। তাই এসব সংগ্রহ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।’

বাংলাদেশে গাজার সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন, বাসমাহ ফাউন্ডেশন, হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এইচসিএসবি), আল-আযহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তিগতভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়াসহ অনেকেই অর্থ সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন থেকেও গাজায় সহায়তার জন্য নগদ অর্থ উত্তোলনের খবর পাওয়া গেছে।

গাজায় সহায়তা পাঠানো নিয়ে প্রশ্নে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছি। গত শুক্রবারই ৯ লাখ টাকা পাঠিয়েছি।’

অবরুদ্ধ গাজায় কীভাবে সহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘গাজায় সরাসরি যাওয়ার অনুমতি আমাদের নেই। আমাদের একজন প্রতিনিধি মিশরে গিয়ে স্থানীয় ও কিছু আরব ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তি করেছেন, যাদের গাজায় প্রবেশের অনুমতি আছে, তাদের মাধ্যমেই সহায়তা পাঠাই।’

সহায়তার ধরন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা সরাসরি নগদ অর্থ দিই না। ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে যতটা সম্ভব খাদ্য সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করি।’ বাংলাদেশে গাজায় সহায়তার নামে প্রতারণার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেছেন, বিদেশে যেকোনো অর্থ পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া বিদেশে অর্থ পাঠানো হলে তা পাচার হিসেবে গণ্য হবে। ফিলিস্তিনে সাহায্য পাঠানোর জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনুমোদন নেয়নি।’

অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ পাঠানো নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ওই পরিস্থিতিতে কীভাবে সহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে, সেটি আমার বোধগম্য নয়।’ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে গাজার জন্য অর্থ সংগ্রহের প্রচারকে তিনি ‘ফাঁদ’ বলেও মন্তব্য করেন।

Shera Lather
Link copied!