আইন ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি ও গোপনে জুলাই গণহত্যাকারীদের জামিনে মুক্তির প্রতিবাদে রাজধানীত বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅভ্যুত্থানের ঐক্যবদ্ধ জোট ‘জুলাই ঐক্য’।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি শিক্ষাভবন ঘুরে সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
উপস্থিত বক্তারা বলেন, সুস্পষ্ট একটা ভিডিও ফুটেজ বাংলাদেশে আছে, যেখানে একটা বন্ধু টেনে নিয়ে যাচ্ছে, আর অপর বন্ধুকে পুলিশ বারবার গুলি করছিল, সেটা আমাদের ভাই। এর সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, জাতির সামনে উন্মোচন থাকা সত্ত্বেও, সে আসামিকে এ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নির্দেশে, গোপনে জামিন দিয়ে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছে। সেফ এক্সিট দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, আইন উপদেষ্টাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য, ভোগবিলাসিতা আর হাজার কোটি টাকা বাণিজ্য করার জন্য এতগুলো মায়ের সন্তান আহত নিহত হয়নি। তাদের রক্ত দিয়ে, অঙ্গ দিয়ে তাকে বসানো হয়নি। বাংলার মানুষ আইন উপদেষ্টাকে মসনদে দেখতে চায় না।
জুলাই ঐক্যের নেতারা আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী, যে কিনা আসামিদের গ্রেপ্তার না করে সেফ এক্সিট দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যাকারীদের দেশ থেকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করছে। তাই আমাদের দাবি জুলাইয়ের গণহত্যাকারীদের সহযোগী দুইটাকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বের করতে হবে। যদি কোনো শহীদ গণহত্যাকারীকে জামিন দেওয়া হয় এবং আহত যোদ্ধাদের সম্মানপূর্ণভাবে সঠিক সম্মান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত না করা হয়, তাহলে আমরা রাজপথে যেতে বাধ্য হব।’
বক্তারা বলেন, ‘আন্দোলনে আজকে প্রায় এক বছর পার হয়ে গেছে, আমরা তেমন কোনো দৃশ্যমান বিচার পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে যারা বসেছেন, তারা তাদের নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশে যে পরিমাণে মা-বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে, সেই ১৯৭১-এ এতগুলো মা-বোন ধর্ষণ হয়নি। আমরা কার কাছে এ বিচার দেব?’
‘উপদেষ্টামণ্ডলিতে যারা রয়েছেন তাদের সহযোগিতায় শহীদ পরিবারের আসামিকে জামিন দেওয়া হয় না। আহত যোদ্ধাদের বিভিন্ন মামলায় হয়রানি করা হয়। আমরা বাংলাদেশকে এভাবে দেখতে চাই না। আমরা সংস্কারের পাশাপাশি মৌলিক সংস্কারের জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে বাংলাদেশের সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল একটি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত করবেন বলে মনে করি।’
বিএনপির এক নেতাকে উদ্দেশ্য করে জুলাই ঐক্যের নেতারা বলেন, ‘একজন উন্মাদ পাগল ফজলু, আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আমাদের জুলাই যোদ্ধাদেরকে টোকাই বলে গালি দিয়েছেন। বিএনপির কিছু নেতাকর্মী যদি আমাদের বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। এ জুলাই বিপ্লবকে বানচালের চেষ্টা করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আজকে জামায়াত, এনসিপি, বিভিন্ন সংগঠন সংগঠন শহীদদের রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের অবমাননা সহ্য করা হবে না। আসিফ নজরুলসহ যারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট যারা রয়েছেন, তাদের আজকের এ জুলাই ঐক্য থেকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছি।’
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল ফেরদৌস (অব.) লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান (বীর প্রতীক), মেজর হায়দার (অব.), জুলাই ঐক্যের সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী, জুলাই রেভুলুশনারি অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ, জাগ্রত জুলাইয়ের সভাপতি বোরহান মাহমুদসহ জুলাই ঐক্যের সংগঠকরা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন