শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম

কেন বাংলাদেশে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাল স্বর্ণের দাম 

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম

স্বর্ণ। ছবি- সংগৃহীত

স্বর্ণ। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশে স্বর্ণের বাজার নতুন রেকর্ড গড়েছে। দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট হলমার্ক স্বর্ণের দাম উঠেছে ১ লাখ ৭৯ হাজার টাকায়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে নতুন দর ঘোষণা করে, যা ২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাল।

সোনার এ রেকর্ডদর সাধারণ ক্রেতাদের চোখ কপালে তুলেছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, স্বর্ণ এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

তবে বিক্রেতাদের দাবি, এ মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজারের কোনো সিদ্ধান্ত নয়; এটি বৈশ্বিক বাজারের প্রভাব। আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দর টানা বাড়ায় স্থানীয় বাজারেও সমন্বয় করতে হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম

গত এক বছরে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। গত (৩ সেপ্টেম্বর) বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দর ৩ হাজার ৫৫০ ডলার ছাড়িয়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি থামার কোনো লক্ষণ নেই।

কেন বাড়ছে স্বর্ণের দাম?

অর্থনৈতিক মন্দা, যুদ্ধ বা বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার বা বন্ডের চেয়ে স্বর্ণকে বেশি নিরাপদ মনে করেন। কারণ স্বর্ণের মূল্য তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজার সংঘাত, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত দ্বন্দ্ব- সবকিছু মিলে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকছেন স্বর্ণের দিকে।

অস্ট্রেলিয়ার কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, ‘আর্থিক বাজার সবচেয়ে বেশি ভয় পায় অনিশ্চয়তাকে। তাই অনিশ্চিত সময়ে বিনিয়োগকারীদের প্রথম পছন্দ হয়ে ওঠে  স্বর্ণ।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ‘লিবারেশন ডে’ শুল্ক আরোপ করেন, তখনই  স্বর্ণের দাম লাফিয়ে ওঠে। এর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যায়। একই সঙ্গে ফেডারেল রিজার্ভকে চাপ দিয়ে সুদের হার কমানোর তার প্রচেষ্টাও স্বর্ণের দাম বাড়াচ্ছে। ডলার দুর্বল হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সোনা কিনে থাকেন, কারণ এতে তাদের মুদ্রার মূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশেও স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। যুক্তরাজ্য ও জাপানের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ায় পাউন্ড ও ইয়েনের মান কমেছে। তুরস্ক ও মিশরের মতো দেশেও মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষা পেতে মানুষ স্বর্ণের দিকে বেশি বিনিয়োগ করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও নিরাপত্তার স্বার্থে স্বর্ণের মজুত বাড়াচ্ছে। আগে এই ডলার মজুত রেখে তারা ট্রেজারি বন্ড কিনত, কিন্তু ট্রাম্পের নীতি সেই আস্থা কমিয়েছে। ফলে অনেক দেশই এখন ডলারকে সোনায় রূপান্তর করছে।

দেশের বাজারে বর্তমান দর

বাজুসের সর্বশেষ ঘোষণায় বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে- ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি: ১,৭৯,৭৮৮ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি: ১,৬৭,৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি: ১,৪৩,৮২৯ টাকা, সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি: ১,১৯,০৪৩ টাকা।

এর আগে গত ৩০ আগস্টও বাজুস স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল। একদিন পর আবারও দাম বাড়ানো হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বিশ্ববাজারে টানা ঊর্ধ্বগতি থাকায় দেশীয় বাজারেও ঘন ঘন মূল্য সমন্বয় করতে হচ্ছে।

স্বর্ণের দামের ভবিষ্যৎ

অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিরতা ও ডলারের দুর্বলতা অব্যাহত থাকলে স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে। এতে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে এ ধাতু। বিশেষ করে উৎসব বা বিয়ের মৌসুমে গয়নার বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এ মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণকে আরও শক্তিশালী সম্পদে পরিণত করবে। ফলে বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম ক্রমেই নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে।

Link copied!