আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ দেড় লাখেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে ৭ সেপ্টেম্বর, রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা।
পুলিশ সদর দপ্তরের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কাজী জিয়া উদ্দিন বাসস’কে জানান, ‘জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা দেড় লাখ বা তারও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করব।’
তিনি আরও জানান, গত তিন মাস ধরে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের পরামর্শে ৯টি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কোর্সটি পুলিশ মহাপরিদর্শক ও অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআর)-এর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে এবং এটি নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১৩০টি ছোট ও ৪টি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত মোট ১৩৪টি কেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে দুটি প্রামাণ্যচিত্র, একটি ১৫ মিনিটের অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট, একটি ৯ মিনিটের তথ্যচিত্র এবং একটি বুকলেট প্রস্তুত করা হয়েছে।
ডিআইজি জিয়া উদ্দিন আরও জানান, ‘গত ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার পুলিশ সদর দফতরে চার ধাপে ১৫০ জন মাস্টার ট্রেইনারকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ১৯টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১,২৯২ জন মাস্টার ট্রেইনার বা ‘ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (ToT)’ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তারাই পরে মাঠপর্যায়ের দেড় লাখেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেবেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় যেসব পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে বাস্তবমুখী মহড়া ও রিয়েল টাইম প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে, যাতে সব সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি দক্ষভাবে মোকাাবিলা করতে পারে।’
এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ডিআইজি কাজী জিয়া উদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, ‘এই নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। নির্বাচনকে সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ প্রস্তুত করা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন