বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম

চার ক্ষেত্রে ভিসা জটিলতায় পড়ছেন বাংলাদেশিরা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম

পাসপোর্ট। ছবি- সংগৃহীত

পাসপোর্ট। ছবি- সংগৃহীত

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে যেতে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা জটিলতার অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়া বন্ধ বা সীমিত করেছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের।

অনেক ক্ষেত্রেই ভিসা আবেদনের বা পাওয়ার সব যোগ্যতা থাকার পরও কেন ভিসা মিলছে না এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এই খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশে গিয়ে অবৈধভাবে থেকে যাওয়ার প্রবণতা, ভুয়া ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে আবেদন, অনেক দেশের নিজস্ব পরিকল্পনায় পরিবর্তনসহ নানা কারণে বাংলাদেশিদের ভিসা আবেদন বাতিল বা ভিসা রিজেকশন হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ভিসা দেওয়া কিংবা না দেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট দেশের। তবে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং সোর্স কান্ট্রির সঙ্গে সম্পর্কও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, যার ধরন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই নির্ধারণ হয়।

এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ভিসা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশ তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বাংলাদেশের নাগরিকদের কর্মী, শিক্ষাসহ যেকোনো ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বহু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে অন্য দেশে পাড়ি জমান। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোই শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি জাপান ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশেও যান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।

এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি ভিসা জটিলতায় দেশটিতে শিক্ষার্থীদের যাওয়ার সুযোগ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

শিক্ষার্থী ভিসা নিয়ে কাজ করে, এমন বেসরকারি একটি এজেন্সির সিনিয়র কনসালটেন্ট তাজফিয়া মেহজাবিন বলেন, আমেরিকায় আগে এক শ জন আবেদন করলে ত্রিশটি ভিসা অন্তত নিশ্চিত হওয়া যেত। কিন্তু এখন শতকরা পঁচানব্বই শতাংশ ভিসা ফাইলই রিজেক্ট হচ্ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে ভিসার জটিলতা বিভিন্ন রকম। যেসব দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে আছে সে সব দেশের ভিসা পাওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ। তবে যেখানে ভিসার আবেদন করতে দ্বিতীয় কোনো দেশে যেতে হয় সেখানে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন হওয়ায় দেশটিতে থাকা ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে আবেদন করা এখন আর খুব একটা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে ভিসা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এছাড়া পর্তুগাল ও মাল্টায় ভিসা পাওয়ার সংখ্যা ভালো থাকলেও সম্প্রতি এই হার বেশ খানিকটা কমেছে।

তিনি বলেন, অনেকে মাল্টা অথবা স্লোভেনিয়ার মতো দেশগুলোতে শিক্ষার উদ্দেশ্যে গিয়ে সেখানে না থেকে অন্য দেশে চলে গেছে, যার ফলে ওই দেশগুলোও এখন বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী নেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে অনেক শর্ত আরোপ করেছে। তবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে সম্প্রতি শিক্ষা ভিসায় যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিক কারণে পর্যটন কিংবা চিকিৎসার জন্য ভিসা দিতে বেশ আগ্রহী। তবে পর্যটক হিসেবে গিয়ে সেখান থেকে আর না ফেরার মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটক বা চিকিৎসা ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বেশ কিছু দেশ।

কঠোর ভিসা প্রক্রিয়া এবং আর্থিক সক্ষমতাসহ নানা কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের দেশগুলোতে পর্যটন এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাওয়ার প্রবণতা খানিকটা কম। এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বাংলাদেশের জন্য সবচে পছন্দের গন্তব্য। এ ছাড়া মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও যায় বাংলাদেশিরা।

সম্প্রতি রাজনৈতিক কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বেশ জটিল হয়ে গেছে। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর কয়েকমাস সব ধরনের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছিল দুই দেশই। সম্প্রতি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কিছু ভিসা দেওয়া হলেও পর্যটন ভিসা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। আর এ কারণেই পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তবে সেখানেও শুরু হয়েছে জটিলতা।

বেশ কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ আশপাশের দেশগুলোতে পর্যটন ভিসা দেওয়ার প্রবণতা সম্প্রতি বেশ কমেছে। এ ছাড়া কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিদের জন্য অতীতে অন অ্যারাইভাল ভিসা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে।

অন্য দেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি মূলত নির্ভর করে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক বা চুক্তির ওপর। চাহিদা ও যোগান এই হিসেবে চলে লেনদেন। কিন্তু সম্প্রতি এখানেও বেশ জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বাংলাদেশের শ্রমবাজার হিসেবে বৃহৎ গন্তব্য মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশেও চুক্তির মাধ্যমে কম-বেশি কর্মী পাঠায় বাংলাদেশ।

তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেবল সৌদি আরব ছাড়া আর কোনো দেশেই বাংলাদেশি কর্মীরা এই মুহূর্তে খুব একটা যেতে পারছেন না।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি বা বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়া বন্ধ, দুবাই বন্ধ, বাহরাইন বন্ধ, ওমান বন্ধ, কাতারও অলমোস্ট বন্ধ অর্থাৎ আমাদের জন্য যেসব ট্রাডিশনাল শ্রমবাজারগুলো আছে তার সবই অলমোস্ট বন্ধ কেবল সৌদি আরব ছাড়া।

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের শ্রমবাজারেও নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রোমানিয়া, পোল্যান্ড এবং চেকোস্লোভাকিয়াতে কিছু মানুষ যাওয়ার সুযোগ পেলেও এসব দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে না থাকায় খুব একটা কাজে আসছে না। থার্ড কান্ট্রিতে গিয়ে ভিসা আনতে হয়, যা আমাদের ওয়ার্কারদের জন্য সুবিধাজনক নয়। এ ছাড়া ইউরোপের এক দেশে গিয়ে আমাদের শ্রমিকরা অন্য দেশে চলে যাচ্ছে, যে কারণে পরবর্তীতে আর ওই দেশ লোক নিচ্ছে না।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!