জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১৩টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে ৬৫টি হত্যা মামলা রয়েছে, যেখানে মোট ৩ হাজার ৯১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে বলপ্রয়োগের অভিযোগে সারা দেশে ১ হাজার ৭৩০টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৭৩১টি হত্যা মামলা। এসব ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য ও দলীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাদের।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, তদন্তাধীন মামলাগুলোর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৬১টি ও দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ৫২টি মামলা রয়েছে। হত্যা ছাড়াও অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, ভাঙচুর ও সহিংস হামলার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত। এসব মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ছাড়াও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, ‘তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান ও গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হচ্ছে। দ্রুত চার্জশিট দাখিলের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
পুলিশ সদরদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৩৪টি মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি হত্যা মামলা ও ২১টি অন্যান্য মামলা রয়েছে। হত্যা মামলায় ১,৩৯০ জন এবং অন্যান্য মামলায় ৭৭৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চার্জশিট দেওয়া জেলা ও অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, শেরপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ ও জামালপুর।
সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে, যাতে নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত হয়। পুলিশ জানায়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সমাজের প্রতিটি স্তরে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন