ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৫

দুই সপ্তাহে ভারতে গেল ১৩০ টন ইলিশ 

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ১০:৪৭ এএম
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ট্রাকে করে ভারতে ইলিশ পাঠানো হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চলতি বছর দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে শর্ত সাপেক্ষে ১২ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় সরকার। এ অনুমতির মেয়াদ রয়েছে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি অর্থাৎ ১৩০ টন ইলিশ। এই ইলিশ রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার বা প্রায় ২০ কোটি টাকা।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এক দশকের মধ্যে ২০১৯ সালে ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়। ওই বছর চার লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। রপ্তানি আয় হয় ৩৯ লাখ ডলার বা ৩৩ কোটি টাকা। গত সাত বছরে সবচেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই বছর ১৭ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয় এক কোটি ৩৪ লাখ ডলার বা ১৩৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এবারই ভারতে সবচেয়ে কম ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি করে ভারত। দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইলিশ আমদানি করে মিয়ানমার থেকে। যেমন ২৪-২৫ অর্থবছরে (এপ্রিল-মার্চ) দেশটি মিয়ানমার থেকে সাড়ে ৬ লাখ কেজি ইলিশ আমদানি করেছে। গড়ে ভারতের আমদানিমূল্য ছিল ছয় ডলার ২৩ সেন্ট। অন্যদিকে, একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেছে পাঁচ লাখ ৪২ হাজার কেজি ইলিশ। গড় আমদানিমূল্য ছিল ১০ ডলার ৯৩ সেন্ট।

অনুমোদন অনুযায়ী, একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টাইন অফিসার সজীব সাহা জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের ওজন এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজির মধ্যে।

ইলিশের স্বাদ নিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরার ভোজনরসিকরা প্রতিবছরই অপেক্ষায় থাকেন। বাংলাদেশ সরকার সেই চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় সীমিত পরিমাণে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে থাকে।

গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অনুমোদনের তুলনায় রপ্তানি কম হয়েছে। ২০২৩ সালে ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩,৫০০ টন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ দশমিক ২৪ টন।, ২০২২ সালে অনুমতি ছিল ২,৯০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১,৩০০ টন।, ২০২১ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ৪,৬০০ টন, রপ্তানি হয় ১,৬৯৯ টন।, ২০২০ সালে অনুমতি ছিল ১,৪৫০ টন এবং ২০১৯ সালে ৫০০ টন, এর মধ্যে ২০১৯ সালে রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৬ টন।

বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস জানান, ‘এবারও ইলিশের সংকট ও অতিরিক্ত দামের কারণে অনুমোদিত পুরো ইলিশ রপ্তানি সম্ভব না-ও হতে পারে।’