ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৫

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন যুদ্ধবিমান, মাদক কার্টেলের সঙ্গে ‘সশস্ত্র সংঘাতে’ লিপ্ত ওয়াশিংটন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ১০:০২ এএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান শনাক্তের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটির সরকার। কারাকাসের  অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় সামরিক হয়রানি চালাচ্ছে এবং তাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ভেনেজুয়েলার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কারাকাসের মাইকেতিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল সিস্টেম এবং একটি বাণিজ্যিক এয়ারলাইনার এই বিমানের উপস্থিতি শনাক্ত করেছে।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ভ্লাদিমির পাদ্রিনো জানান, অন্তত পাঁচটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার সীমান্তের কাছাকাছি দেখা গেছে। তিনি একে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সরাসরি হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমরা তাদের নজরে রেখেছি। ভেনেজুয়েলার মানুষকে ভয় দেখানো যাবে না। আমাদের জনগণ শান্তি, কাজ ও সুখ চায়—কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সামরিক উসকানি দিয়ে যাচ্ছে।’

যৌথ বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মার্কিন বিমানগুলো উপকূল থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে শনাক্ত হয়। যদিও এটি ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা (২২ কিলোমিটার) লঙ্ঘন নয়, তবে তারা অভিযোগ করেছে যে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে এবং বেসামরিক বিমান চলাচলকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার দেশ এখন মাদক কার্টেলগুলোর সঙ্গে সরাসরি সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত। মার্কিন কংগ্রেসে পাঠানো এক গোপন নোটিশে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

ওই নোটিশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেসে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন মাদক কার্টেলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সশস্ত্র সংঘাতে’ জড়িয়ে আছে। তার প্রশাসন এসব কার্টেলকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সন্দেহভাজন পাচারকারীদের ‘অবৈধ যোদ্ধা’ আখ্যা দিয়েছে।

গত মাসে টানা তিনটি হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা নৌকায় অন্তত ১৭ ভেনেজুয়োর নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব অভিযান ‘সশস্ত্র সংঘাতের আইন’ অনুযায়ী বৈধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই তা পরিচালিত হয়েছে। তাদের যুক্তি, মাদক কার্টেলগুলোর পাচার কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের সমান।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, মার্কিন সেনাদের কোনও সংঘাত বা শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা হলে কংগ্রেসকে সে বিষয়ে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নোটিশে ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, মাদকপাচারে জড়িত এসব কার্টেল হলো ‘অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী’ এবং তাদের কার্যক্রমকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘সশস্ত্র আক্রমণ’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। আর এই অবস্থাকে তিনি ‘অ-আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাত’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

তবে নোটিশে কোনো কার্টেলের নাম উল্লেখ করা হয়নি কিংবা কাদের ‘অবৈধ যোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, তার মানদণ্ডও স্পষ্ট করা হয়নি।