ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

যুদ্ধবিরতিতেও মরছে মানুষ, ইসরায়েলির বিরুদ্ধে লাশ গুমের অভিযোগ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
ছবি - সংগৃহীত

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকছে; পশ্চিম তীরেও সংঘাত নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির মার্কিন-প্রস্তাবিত পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এই কঠিন পর্যায়ে যেতে চায় তেল আবিব।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি  এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এখনো চূড়ান্ত না হলেও মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়গুলোর সমাধান খোঁজা হবে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় দেড় শতাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৩৭৩ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছে।

নেতানিয়াহু দাবি করে বলেন, হামাসকে শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতি নয়, নিরস্ত্রীকরণসহ পুরো পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি মানতে হবে।

এদিকে পশ্চিম তীরের কালকিলিয়ায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে এক তরুণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েলি বাহিনী তার মরদেহ পরিবারকে না দিয়ে জব্দ করে নিয়ে গেছে।

একই সময়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগও; ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন ঘাঁটির ভেতরে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা গোপনে মার্কিন ও মিত্র বাহিনীর কর্মকাণ্ড নজরদারি করেছে- যে কারণে ঘাঁটির কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ফ্র্যাঙ্ক ইসরায়েলকে সরাসরি সতর্ক করে রেকর্ডিং বন্ধের নির্দেশ দেন।

এরমধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরের ১৭টি নতুন অবৈধ বসতি স্থাপন ও সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ৮৩০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছেন ইসরায়েলের অতি-ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ।

জেরুজালেমের উত্তরে আল-রাম এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরেক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন এবং হিজমা শহরে বাড়িঘর ভাঙার প্রস্তুতি হিসেবে সামরিক বুলডোজার মোতায়েন করা হয়েছে।

সংঘাতের এই বিস্তৃত উত্তেজনার মধ্যেই অন্যদিকে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শিশু-কনটেন্ট নির্মাতা মিস র‍্যাচেলকে ঘিরে বিতর্ক। ‘বর্ষসেরা ইহুদি-বিরোধী’ তালিকায় যুক্ত করার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার হুমকির মুখে পড়েছেন বলে জানান।

ইসরায়েলপন্থি গোষ্ঠীর হামাসকে সমর্থনের মিথ্যা অভিযোগে তিনি নিরাপত্তা কর্মীও নিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছেন, যা তার অল্প বয়সী সন্তানদের মধ্যেও ভয় ছড়িয়ে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরজুড়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে- যুদ্ধবিরতির মধ্যে চলমান হামলা, সন্দেহজনক গুপ্তচরবৃত্তি, বসতি সম্প্রসারণ এবং মানবিক সংকট নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।