প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল ৬ অক্টোবর ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে বাণী প্রদান করেছেন।
‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির জাতিসংঘ নির্ধারিত প্রতিপাদ্য- ‘Urban Crisis Response’, বাংলায় যার ভাবার্থ ‘পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া’ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম নগরায়িত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে নাগরিক জীবনযাত্রায় এ নগরায়নের কাঙ্ক্ষিত সুফল দেখা যাচ্ছে না। একদিকে যেমন রাজধানীকেন্দ্রিক অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ভারসাম্যহীন উন্নয়ন হচ্ছে অন্যদিকে দেশের অন্যান্য নগর এলাকার যথাযথ বিকাশ ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একইসাথে রাজধানীকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংকট ক্রমাগত নাগরিক জীবনকে সমস্যাগ্রস্ত করছে। এসব সংকট মোকাবিলায় দ্রুত, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন জরুরি, যা এ বছরের বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্যের সাথে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের নগরাঞ্চলের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল নগরাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার বহুবিধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। নগর সংকট মোকাবিলায় দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সাথে নানাবিধ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা একটি সম্ভাবনাময় নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এরই ধারাবাহিকতায় অচিরেই নগর সমস্যার টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সমাধান এবং দেশের সকল নগরাঞ্চলের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশের নগরাঞ্চলের সংকট মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারী, কমিউনিটি গ্রুপ, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সমন্বিতভাবে ভূমিকা রাখার জন্য আমি আহ্বান জানাই। আমি বিশ্বাস করি, সকলের যৌথ ও সচেতন অংশীদারিত্বের মাধ্যমেই আমাদের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ নগর জীবনের অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
আমি ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন