বিশ্ব ডিম দিবস আজ। ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ডিম দিবস। ‘শক্তি ও পুষ্টিতে ভরপুর ডিম’ স্লোগান সামনে রেখে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পালন করছে এবারের দিবসটি।
দেশের পোল্ট্রি খাতের বৃহৎ উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিপিআইসিসি এবং ওয়াপসা- বাংলাদেশ শাখার যৌথ আয়োজনে আজ বিশ্ব ডিম দিবস পালন করা হবে।
জানা গেছে, বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ডিমকে বলা হয় পরিপূর্ণ খাদ্য। পৃথিবীতে মাত্র কয়েকটি খাদ্যকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ডিম অন্যতম। প্রাকৃতিকভাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী সহজলভ্য, ডিম একটি নম্র কিন্তু শক্তিশালী আস্ত খাদ্য যা জীবনের প্রতিটি স্তরে স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বজায় রাখে। পুষ্টিগুণের বাইরেও, ডিম বিভিন্ন রন্ধনসম্পর্কীয় ঐতিহ্য এবং খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মহাদেশ জুড়ে তাদের বহুমুখীতা এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য প্রতিফলিত করে।
২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা মাথাপিছু ১৩৬টি। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার এদেশে প্রতিদিন মাত্র সাড়ে ৬ কোটি ডিম উৎপাদন হয়।
১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত আইইসি ভিয়েনা কনফারেন্স থেকেই এই ডিম দিবস পালন করা হচ্ছে। এই দিবসকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী চলছে একটি ইতিবাচক ক্যাম্পেইন। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিমের প্রয়োজনীয়তার বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ডিমের উপকারিতা
ডিম সুস্বাদু, পুষ্টিগুণে ভরা আর সহজলভ্য এক খাবার। ছোট এই খাবারে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টিগুণ। আবার টেকসই প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে এর স্থান সবার ওপরে। তাই ডিম সবার খাওয়া প্রয়োজন। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধের জন্য অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের প্রতিদিন ডিম খাওয়া প্রয়োজন। কারণ ডিমে আয়রন রয়েছে, যা শরীরে খুব সহজে শোষিত হয়, বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং আয়রনের অভাবজনিত রোগ যেমন রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি দূর করতে সহায়তা করে।
ডিমে বিদ্যমান ভিটামিন এ, ডি, ই, কোলিন, ফোলিক এসিড এবং আয়রনসহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান থাকে, যা শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হরমোনের ইমব্যালেন্স রোধে, বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে এবং স্বল্প সময়ে এনার্জি পাওয়ার জন্য ডিম খুবই উপকারী। ডিমে টাইরোসিন এবং ট্রিপটোফেন নামক দুটি অ্যামাইনো এসিড রয়েছে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। দেশে মোট মৃত্যুর ৩৪ শতাংশের পেছনে আছে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির রোগ। দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
ক্যান্সার রোগীদের অবশ্যই ডিম খেতে হবে, কারণ ডিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কোষের পুনর্বৃদ্ধিতে সহায়তা করে; কিন্তু ডিম অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে।