সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ধরে নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করেছেন সরকারি কর্মচারীরা।
তারা এও বলছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যায্যতা ও বৈষম্যমুক্ত নবম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় কর্মচারীরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে আল্টিমেটাম দেন চাকরিজীবী নেতারা।
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নবম পে কমিশন গঠন করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে এবার পে কমিশন যেন একটি বৈষম্যমুক্ত, বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য বেতন কাঠামো প্রস্তাব করে, এটাই কর্মচারীদের প্রত্যাশা।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২০১৫ সালের পে স্কেলে ব্যাপক বৈষম্য ছিল এবং গত ১০ বছরে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা দুটি পে স্কেল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
‘তাই বর্তমান বাজারদর ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন কাঠামো প্রণয়ন জরুরি। আমরা সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ধরে ১৩ গ্রেডের নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করছি’, যোগ করেন মাহমুদুল হাসান।
ফোরামের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৮০ শতাংশ, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭০ শতাংশ এবং অন্য এলাকায় ৬০ শতাংশ করতে হবে।
একইসঙ্গে চিকিৎসা ভাতা ৬ হাজার, শিক্ষা ভাতা (সন্তান প্রতি) ৩ হাজার, যাতায়াত ভাতা ঢাকায় ৩ হাজার ও অন্যান্য এলাকায় ২ হাজার, ইউটিলিটি ভাতা ২ হাজার, টিফিন ভাতা দৈনিক ১০০ টাকা (মাসে ২২০০), বৈশাখী ভাতা ৫০ শতাংশ, ঝুঁকি ভাতা ২ হাজার এবং পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ ভাতা দিতে হবে।
এ ছাড়া পেনশন সুবিধা বিদ্যমান ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার এবং আনুতোষিকের হার ২৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়।
পাশাপাশি পুরোনো নিয়মে তিনটি টাইমস্কেল ও দুটি সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন সুবিধা ও গৃহঋণ প্রদান, ব্লক পদ বাতিল করে পদোন্নতির ব্যবস্থা, রেশন ব্যবস্থা চালু এবং বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়।
ফোরামের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নতুন পে স্কেল থেকে বঞ্চিত। আমরা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈষম্যমুক্ত নতুন পে স্কেল চাই। অন্যথায় আমরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’
এ সময় ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী রফিকুল ইসলাম মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।