চলতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ১ হাজার ৬০০টি অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে ৫৮০টি ঘটেছে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে- এমন তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল। তিনি বলেন, এসব দুর্ঘটনায় বিভিন্ন স্থাপনায় ২০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি : অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্যানেল আলোচনায় তিনি এ তথ্য দেন।
ডিজি জাহেদ কামাল জানান, ‘ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজে প্রায় ৯৫ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ সময় অনেক ফায়ার ফাইটার আহত হয়েছেন। আর সম্প্রতি কেমিক্যাল বিস্ফোরণে আমাদের তিনজন সহকর্মী শাহাদাতবরণ করেছেন। এই ঘটনাগুলো আমাদের আরও সচেতন হওয়ার প্রেরণা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘এলপিজি সেক্টর দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। যার সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই এখন থেকেই নিরাপত্তা ও সচেতনতা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি।’
ফায়ার সার্ভিস মহাপরিচালক আরও জানান, অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তকে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘আমরা ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত বইয়ে অগ্নিনিরাপত্তা সম্পর্কিত পাঠ যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করছি, ২০২৬ সালের বইয়ে এটি অন্তর্ভুক্ত হবে। কারণ প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার বিকল্প নেই,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে দুর্ঘটনা কমেছে, এলপিজি খাতেও তেমন প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। বর্তমানে দেশের ৫৩৭টি ফায়ার স্টেশনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ৯৯৭টি স্টেশনে উন্নীত করা হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এবং অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।