দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় একজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোরে মসায়লে গ্রামে একটি ভারী যন্ত্রপাতি বিক্রির স্থানে এ হামলা হয়, এতে বহু যানবাহন ধ্বংস হয়ে যায়। হামলায় বৈরুতের সঙ্গে দক্ষিণ লেবাননের সংযোগ সড়কও বন্ধ হয়ে যায় বলে জানায় লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
হিজবুল্লাহর আল-মানার টিভি জানিয়েছে, হামলার সময় সেখানে সবজি বহনকারী একটি গাড়ি যাচ্ছিল। বিমান হামলা গাড়িটিতে আঘাত করলে একজন নিহত ও একজন আহত হন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহত ব্যক্তি একজন সিরিয়ান নাগরিক। আহতদের মধ্যে একজন সিরিয়ান ও ছয়জন লেবানিজ। যাদের মধ্যে দুইজন নারী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এমন একটি স্থানে হামলা চালিয়েছে যেখানে ‘জঙ্গি’ হিজবুল্লাহ সংগঠনের অবকাঠামো পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সংরক্ষিত ছিল। লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন শনিবার ইসরায়েলের এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি জানান, আবারও দক্ষিণ লেবাননের বেসামরিক স্থাপনাগুলো ইসরায়েলের নির্মম আগ্রাসনের শিকার হলো। যার কোনো যুক্তি বা কারণ নেই।
গাজায় যুদ্ধবিরতির পর এমন হামলা অত্যন্ত গুরুতর ও নিন্দনীয়। গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন লেবাননে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এতে এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। হিজবুল্লাহ আবারও নিজেদের সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভোলকার টার্ক এ মাসের শুরুতে লেবাননে স্থায়ীভাবে সংঘাতের অবসানের আহ্বান জানান। সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত লেবাননে যুদ্ধবিরতির পর ১০৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, সাম্প্রতিক ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের সময় লেবাননে ৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। যাদের মধ্যে শতাধিক ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। দেশটিতে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলে ১২৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮০ জন ছিলেন সেনা সদস্য।
২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর হিজবুল্লাহ সীমান্ত পেরিয়ে রকেট নিক্ষেপ শুরু করলে এই যুদ্ধ শুরু হয়। এর একদিন পর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে প্রাণঘাতী আক্রমণ গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। এর জবাবে ইসরায়েল লেবাননে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা শুরু করে। যা ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়।