ঢাকা শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫

কাঠমান্ডুতে ‘বাংলাদেশ ফিশ ফেস্টিভাল ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ১০:১৭ পিএম
কাঠমান্ডুতে ‘বাংলাদেশ ফিশ ফেস্টিভাল ২০২৫’ অনুষ্ঠিত। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কাঠমান্ডুতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘বাংলাদেশ ফিশ ফেস্টিভাল ২০২৫’। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন হয়।

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবে নেপালের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা, থিংক ট্যাংক, হোটেল ব্যবস্থাপক, গণমাধ্যমকর্মীসহ নানা ক্ষেত্রের দেড় শতাধিক অতিথি অংশ নেন। অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেপালের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব কৃষ্ণ প্রসাদ ধাকাল।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সমৃদ্ধ মৎস্যসম্পদ, ঐতিহ্যবাহী রন্ধনশৈলী এবং ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ’–এর সংস্কৃতি তুলে ধরাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নদীনির্ভর ভূপ্রকৃতি মিঠা পানি ও সামুদ্রিক মাছের বিশাল বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে, যার স্বাদ-সুনাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত।’

গেস্ট অব অনার কৃষ্ণ প্রসাদ ধাকাল তাঁর বক্তব্যে উৎসবটিকে নেপাল-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের নতুন মাত্রা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করবে। একইসঙ্গে তিনি মৎস্যসম্পদ, একোয়াকালচার, খাদ্য নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও জ্বালানি খাতে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সহযোগিতার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।’

ফেস্টিভালের প্রধান আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের নানাবিধ মাছ দিয়ে প্রস্তুত অনন্য সব খাবার। বিশেষ করে বাংলাদেশি শেফদের হাতে তৈরি ‘স্মোকড ইলিশ (কাঁটা ছাড়া)’ ও ‘সরষে ইলিশ’ অতিথিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। পাশাপাশি পরিবেশিত হয় রুই ও কাতলা কারি, গ্রিলড লবস্টার, রেড স্ন্যাপার, ফ্রাইড রুপচাঁদা, চিংড়ি টেম্পুরা, আইড় ও বোয়াল মাছের পদসহ আরও অনেক রন্ধনপ্রণালী, যা বাংলাদেশের সমৃদ্ধ খাদ্যসংস্কৃতিকে উজ্জ্বলভাবে ফুটিয়ে তোলে।

এ আয়োজনের অংশ হিসেবে দূতাবাস ২৪ নভেম্বর নেপালের ব্যবসায়ীদের নিয়ে মাছ প্রদর্শনীও আয়োজন করে, যেখানে হসপিটালিটি খাতের শীর্ষ আমদানিকারকরা অংশ নেন। উদ্দেশ্য ছিল নেপালের বাজারে বাংলাদেশের মিঠা পানি ও সামুদ্রিক মাছের সম্ভাবনা তুলে ধরা এবং ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের পথ সুগম করা।

ফেস্টিভাল উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পোস্টার, বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী ও জুলাই-আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের পোস্টার প্রদর্শিত হয়, যা বাংলাদেশ ২.০–এর নতুন যাত্রা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে প্রতিফলিত করে।

নেপালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই ‘বাংলাদেশ ফিশ ফেস্টিভাল’ স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অতিথিদের উচ্ছ্বসিত অংশগ্রহণে এটি রূপ নেয় বাংলাদেশ–নেপাল বন্ধুত্ব ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের এক অনন্য আয়োজনে।