আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির সময় চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। মামলাটি জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত।
আজ রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল চত্বরে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
তিনি জানান, এ দিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ তা সরাসরি সম্প্রচারের উদ্যোগ নেয়। তবে যুক্তিতর্ক চলাকালেই প্রসিকিউটর দপ্তরের ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা হয় এবং পেজটি সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘সাইবার অ্যাটাকের কারণে আমাদের ফেসবুক পেজটি তাৎক্ষণিকভাবে ডিজেবল করা হয়। তবে দ্রুত রিকভারি সম্ভব হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই হামলা প্রমাণ করে, তারা আমাদের ভয় পায়। এই মামলার প্রমাণ, নির্যাতনের বিবরণ, যুক্তিতর্কের তথ্য যাতে দুনিয়াবাসী জানতে না পারে সেই কারণেই অপরাধীরা এমন হামলা চালিয়েছে।’
ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন এই মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সাবেক আইজিপি মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ তাকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গত বুধবার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম শেষ হয়। সে দিন মামলার ৫৪তম সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তি তুলে ধরেছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাইবার হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘অপরাধ করে কেউ রেহাই পাবে না। অপরাধীকে রক্ষা করার কোনো চেষ্টাই এই দেশে সফল হবে না। আমরা সব প্রমাণ উপস্থাপন করব, জনগণও তা জানতে পারবে।’
তিনি আরও জানান, ‘এই হামলার বিষয়ে প্রযুক্তিগত ও আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম যেন নিরাপদভাবে চলতে পারে, সে জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হবে।’