ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

হামাস আজই ২০ জিম্মি মুক্তিতে প্রস্তুত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৫:৩৬ পিএম
হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে জমায়েত হয়েছেন ইসরায়েলি। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তাদের কাছে থাকা ২০ জিম্মিকে আজ রোববার মুক্তি দিতে প্রস্তুত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অতর্কিত হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা ও প্রায় ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস। টানা দুই বছরের গাজা যুদ্ধে এখন অবধি ২০ জন ইসরায়েলি জীবিত রয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

রোববার (১২ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হামাস আজ ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তার দেশ তাৎক্ষণিকভাবে সব জিম্মিদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বিশ্বাস করছেন, রোববার মধ্যরাতের আগেই হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেবে, যাতে সোমবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল সফরে পৌঁছানোর আগে তাদের ইসরায়েলি হেফাজতে আনা যায়।

তবে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা দ্য জেরুজালেম পোস্ট-কে জানান, এ তথ্য রোববারের আগের এক বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওই বক্তব্যে বলা হয়েছিল, হামাস সোমবার ভোরের (১৩ অক্টোবর) মধ্যে জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি হিসেবে হামাস জীবিত জিম্মিদের একত্রিত করা শুরু করেছে। প্রক্রিয়াটি সকাল ৬টার দিকে শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে হামাস এখনো হস্তান্তরের সুনির্দিষ্ট স্থান ঘোষণা করেনি। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষও জানায়নি, হস্তান্তর একাধিক স্থানে হবে নাকি নির্দিষ্ট একটি কেন্দ্রে।

ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা মারিভ পত্রিকাকে বলেন, ‘আগের মুক্তিগুলোর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, হামাস সাধারণত হস্তান্তরের আগের দিনগুলোতে বন্দিদের এক জায়গায় জড়ো করে রাখে। আমরা ধারণা করছি, গত ২৪ ঘণ্টায় তারাই সেটি করেছে।’

ইসরায়েলি সরকার বর্তমানে দুটি সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। প্রথমত, জীবিত ও মৃত উভয় বন্দিকে একসঙ্গে হস্তান্তর করা হবে; দ্বিতীয়ত, পুরো প্রক্রিয়া সকাল ৯টার মধ্যে সম্পন্ন করা হবে (ট্রাম্পের আগমনের সময়ের সঙ্গে মিলবে)। সরকারি চুক্তি অনুমোদনের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ সোমবার দুপুর নাগাদ সব জিম্মি মুক্তি পাবে বলে আশা করছে তেলআবিব।

অন্যদিকে, আরব সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামাস ইতোমধ্যে নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলে ফেরানোর প্রস্তুতিও শুরু করেছে। তবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সূত্রের আশঙ্কা, হামাস নিহতদের কিছু মরদেহ হারিয়ে ফেলেছে।

ইসরায়েলের ধর্মীয় সেবা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইয়েহুদা আভিদান কান রেডিওকে বলেন, “আমার সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো, আমাদের বলা হবে ‘মিলছে না’। এতে পরিবারগুলো চূড়ান্ত মানসিক যন্ত্রণায় পড়বে। আমরা হামাসের কথায় একটুও বিশ্বাস করি না।”

এই সম্ভাব্য জিম্মি-মুক্তি চুক্তি আসে মিশরের শার্ম আল-শেখে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনার পর। সেখানে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার কাতারি, মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সহযোগিতায় ইসরায়েল এবং হামাসকে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ দেন।