জামায়াতে ইসলামী প্রধান উপদেষ্টার বরাবর জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করাসহ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা, এবং আরও চার দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) দলের নেতারা ঢাকাসহ দেশের সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একযোগে স্মারকলিপি জমা দেন। ঢাকায় স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
স্মারকলিপি প্রদানের আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দলীয় চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। মনোনয়নের নামে দলীয় যেই চাঁদাবাজি হয় সেটির সুযোগ থাকবে না। ফলে নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ হবে। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। জনগণ সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। প্রতিটি ভোট মূল্যায়িত হবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে দেখা যায়, মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়, অপরদিকে ১ ভোটের ব্যবধানে লাখ-লাখ ভোট নষ্ট হয়। লাখ লাখ ভোটারের মতামতের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। তাই প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতিতে সত্যিকারের জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয় না, জনগণের সরকার গঠিত হয় না।’
জামায়াতের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান;
- সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন;
- অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ;
- ফ্যাসিস্ট শাসনের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিতকরণ;
- স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে ‘ফ্যাসিবাদের পুনরূত্থান’ ঘটতে পারেও বলে সতর্ক করেছেন তারা।
বুলবুল এ সময় গণভোট নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগও জানান। তিনি বলেন, ‘গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিন করা ঠিক নয়, গণভোট আগে করা উচিত। যারা গোপনে জুলাই সনদের বিরোধী তাদেরই স্বার্থে গণভোট নির্বাচন-দিন কিউ করে থাকতে চাওয়ার চক্রান্ত আছে।’
তিনি দাবি করেন, কিছু পক্ষ ব্যালট ছিনতাই করে গণভোটে ‘না’ প্রস্তাব জিতিয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি রুখে দিতে চায়।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলার আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন। এতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম (ঢাকা-১), শাহিনুল ইসলাম (ঢাকা-৩), মোহাম্মদ কামাল হোসেন (ঢাকা-৫), ড. আব্দুল মান্নান (ঢাকা-৬), অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন (ঢাকা-৮), আব্দুর রব (ঢাকা-২০)-সহ ঢাকা মহানগরী ও জেলা পর্যায়ের অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতারা।
সমাবেশ শেষে নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করে।