‘ময়মনসিংহ বিভাগে নয়, থাকতে চাই ঢাকা বিভাগে’—এই স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভৈরবের জনপদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
রোববার (১২ অক্টোবর) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ছাত্র-জনতার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে রাখা হয়। দাবি আদায় না হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেন ছাত্র-জনতা।
বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রনেতা হান্নান আহমেদ হিমুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতিনিধি ছাত্রনেতা জাহিদুল ইসলাম হৃদয়, গণঅধিকার পরিষদ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল, ছাত্রনেতা জিয়া উদ্দিন, জুনায়েদ আহমেদ, পরাগ, জিহাদ আহমেদ, মোহাম্মদ আবির, মাহিন মিয়া, মাওলানা শাহরিয়ার প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ভৈরববাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করা। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ভৈরবের মানুষকে দীর্ঘদিন আন্দোলন থেকে বিরত রেখেছে। ফ্যাসিস্ট দোসররা চাইলে অনেক আগেই ভৈরব জেলা হতো।
বক্তারা দাবি করেন, ভৈরবকে জেলায় রূপান্তর করে ঢাকা বিভাগেই রাখতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার যে প্রস্তাব এসেছে, তা ভৈরববাসী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে।
এ বিষয়ে ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতিনিধি ছাত্রনেতা জাহিদুল ইসলাম হৃদয় বলেন, ‘আজকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অচিরেই ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করে ঢাকা বিভাগেই অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। তা না হলে সারা দেশের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এ সময় তিনি সড়কপথ, নৌপথ ও রেলপথ অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
বিক্ষোভ শেষে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেয়। ঘণ্টাব্যাপী বন্ধ থাকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহগামী যান চলাচল।
এদিকে, ১১ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় ভৈরবের নেটিজেনদের মাঝে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলা মুখ্য সংগঠক শরিফুল হক জয় তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশটারে অস্থিতিশীল কইরেন না! কিশোরগঞ্জ ঢাকা বিভাগে থাকবে, এটা আগের সিদ্ধান্তই।’
তিনি আরও লেখেন—আপনাদের নতুন করে আমাদের ময়মনসিংহ বিভাগে দিতে হবে না। কাজের কাজ করেন, আজাইরা কাজ বেশি কইরেন না। যদি পুনর্বিন্যাস করতেই হয়, তাহলে ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করে ঢাকা বিভাগে দিন।
কারণ, ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাতায়াত আমাদের জন্য অসম্ভব।”
এ ছাড়া নেটিজেনরা ভৈরবকে জেলা দাবি করে কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে না নিয়ে ঢাকা বিভাগেই রাখার আহ্বান জানান।