ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

সার না পেলে ইউএনও ও কৃষি অফিস ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
বালিয়াডাঙ্গীতে খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের শাখার মানববন্ধন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাসায়নিক সারের সংকটে চাষাবাদে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর কৃষকরা। টাকা পকেটে নিয়েও ডিলারদের দোকানে ঘুরে সার পাচ্ছেন না তারা। সঠিক সময়ে সার না পেলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

এই পরিস্থিতিতে খোলা বাজারে সার সরবরাহ নিশ্চিত না হলে ইউএনও ও কৃষি অফিস ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্জাক নামে এক কৃষক। তার এই ঘোষণায় সংহতি প্রকাশ করেছেন আরও অনেক কৃষক।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় খুচরা সার বিক্রেতা হিসেবে নিবন্ধিত আইডিধারীদের সার বরাদ্দ দেওয়ার দাবিতে খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

কৃষক রাজ্জাক বলেন, ‘আলু চাষিরা পর্যায়ক্রমে আলু রোপণ করবে, পর্যায়ক্রমে আলু তুলে বাজারে বিক্রি করবে—তাহলে দু’পয়সা লাভ পাবে। ডিলাররা বাহানা ধরেছে, তারা মাসে একদিন সার দেবে। বাকি ২৯ দিন কৃষকরা কোথায় সার পাবে, কার কাছে যাবে? এ জন্য সার বিক্রি উন্মুক্তভাবে করার দাবি জানাই। আমরা চাই, যারা খুচরা লাইসেন্সধারী ডিলার, তাদেরও সার বরাদ্দ দেওয়া হোক।’

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে মহিষমারী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘৩৫-৪০ বিঘা জমিতে আবাদ করি। ঘুরে ঘুরে অনেক দেরিতে সার পাই, তাও আবার অল্প পরিমাণে। তাই প্রতিটি ফসল পিছিয়ে যাচ্ছে, ফলন কম হচ্ছে। এসব দূর করতে কৃষকদের কথা ভাবতে হবে। কিন্তু আমাদের কথা শোনার মতো কেউ নেই। পকেটে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ঘুরছি, কেউ সার দিতে পারছে না।’

বড়বাড়ি গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কয়েকদিন বিভিন্ন ডিলারের কাছে ঘুরেও সার পাইনি। বারবার সময় দেখিয়ে ঘুরিয়ে হয়রানি করছে ডিলাররা। আমাদের কৃষকদের দাবি—আমরা যেন খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে সার পাই। সরকার যেন খুচরা বিক্রেতাদের সার দেয়, এটাই কৃষকদের দাবি।’

খুচরা সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সভাপতি সাবুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৩ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, বিসিআইসি ডিলারদের বরাদ্দ করা সারের মধ্যে ৬০ ভাগ আমাদেরকে দিতে হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে সারের সংকট থাকবে না। কৃষকরা তাদের সুবিধামতো সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নের দাবিতেই রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। দাবি আদায় হলেই সব সমস্যা সমাধান হবে। আমরা অন্য জায়গা থেকে সার নিলে সরকার আমাদের সার জব্দ করছে। তাহলে কীভাবে কৃষকদের সার দেব? ডিলার সার দেয় ১ দিন, আর আমরা দিচ্ছি ২৯ দিন।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জীবন, সিনিয়র সাংবাদিক হারুন অর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জুলফিকার আলী, খুচরা সার বিক্রেতা হাসান আলীসহ সার সংকটে ভুক্তভোগী কৃষকরা।