যাচাই-বাছাইকৃত ১০৯০টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার এমপিও তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ এবং অনুদানবিহীন সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওকরণের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারির দাবি বাস্তবায়নে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন শিক্ষকরা। এই সময়ে দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
রোববার (১২ অক্টোবর) বিজয় স্মরণীর মোড়ে ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়ন ঐক্য ফোরাম’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এই আল্টিমেটামের ঘোষণা দেওয়া হয়।
ফোরামের নেতারা বলছেন, ১৯৭৮ সালে ৯ অডিন্যান্স-২-এর ধারা মোতাবেক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাসমূহকে ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচক অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার ন্যায় সকল শিক্ষা পাঠদান করে আসছে। দেশে প্রাথমিক শিক্ষার ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি ও ফিডিংয়ের ব্যবস্থা ছিল, যা অজানা কারণে ২০২২ সাল থেকে বন্ধ।
নেতাদের অভিযোগ, ১৯৯৪ সালে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৮ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের একই পরিপত্রে ৫০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হলেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা পূর্বের ন্যায় বেতন বঞ্চিত রয়েছে, যারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সংগঠনের মহাসচিব মো. রেজাউল হক বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী গণঅভ্যূত্থানের সরকারের পক্ষ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব গত ২৮ জানুয়ারি শাহবাগ মোড়ে এসে ঘোষণা দেন, পর্যায়ক্রমে সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ করা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই ঘোষণার সাত মাস পর গত জুলাই মাসে মাত্র ১৫১৯টি অনুদান প্রাপ্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার এমপিও করনের জন্য আবেদন গ্রহণ করেন, যা যাচাই-বাছাই করে প্রায় ৭২ দিন পূর্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখে নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদেরকে আরও বেশি হতাশায় ফেলে দিয়েছে। কারণ প্রায় ৯ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে মাত্র ১৫১৯টি মাদ্রাসার আবেদন যাচাই-বাছাই করে ১০৯০টির ফাইল এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।’
‘এ কারণে মানববন্ধন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অভিমুখে পদযাত্রাসহ স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূপি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে প্রশাসনের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নিয়ে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা দেশে আসলে দ্রুত গতিতে প্রথম পর্যায়ের ফাইল স্বাক্ষর করে তালিকা প্রকাশ এবং ২য় দফা অনুদান বিহীন সকল প্রতিষ্ঠানের এমপিও আবেদনের গণবিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়ে আশ্বস্ত করেন’, যোগ করেন তিনি।
মাওলানা আহমদ আলীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ফোরামের নজরুল ইসলাম হিরন, শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুব, জহুরুল ইসলাম, নুর হোসেন, খলিলুর রহমান, শহিদুল ইসলাম সাদ্দাম, এনায়েতুর রহমান, ওসমান গণি, শামীম আহমেদ, এল এম রফিক, মিজানুর রহমান, আজিজুর রহমান, শাহজাহান হোসেন সাজু প্রমুখ বক্তব্য দেন। এতে ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন