বর্তমান সরকার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর পরিবর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মনে করছে, এতে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে না।
রোববার (১২ অক্টোবর) টিআইবি এক বিবৃতিতে বলেছে, এনসিটিবির সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের পরিবর্তে মুদ্রণ ও বিতরণের দায়িত্ব অন্য প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করা বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, বরং এক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হবে, যা গুণগত কোনো পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রাখে না।
টিআইবি জোর দিয়ে বলেছে, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণের পুরো প্রক্রিয়ায় স্বায়ত্তশাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এনসিটিবির বাস্তব স্বায়ত্তশাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করা না হলে বিকেন্দ্রীকরণের নামে যেকোনো অস্থায়ী উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না। বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণ করা হলে এনসিটিবি দুর্বল হবে, কিন্তু লক্ষ্য অর্জনে গুণগত কোনো পরিবর্তন আসবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। অধিদপ্তরকে আলাদাভাবে পাঠ্যবই মুদ্রণের এখতিয়ার দিলে সংকট ও সমন্বয়হীনতা বৃদ্ধি পাবে। বিকেন্দ্রীকরণের ফলে দুটি সংস্থা থাকলেও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন না থাকলে সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হবে না।’
টিআইবি প্রশ্ন তুলেছে, ‘সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মান নিয়ে প্রশ্ন এবং কাজের সমন্বয়হীনতার দায়ভার কি শুধুমাত্র এনসিটিবির ওপরই পড়বে, নাকি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরও দায় এড়াতে পারবে?’
এফ.ই.জি. জামান বলেন, ‘এনসিটিবি অদক্ষতা, অনিয়ম ও পেশাগত অবক্ষয়ের শিকার। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, দরপত্র প্রক্রিয়া, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণে এনসিটিবিকে সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কারণ অনুসন্ধান করে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’