ময়মনসিংহে বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় সার্জিকেল যন্ত্র রেখে পরপর তিন অপারেশন করা হয় প্রসূতির। এতে শান্তা (২০) নামের ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। স্বজনদের আহাজারিতে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৪ লাখ টাকায় দফারফা করা হয়। নিহত শান্তা (২০) নগরীর বলাশপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তাকিমের স্ত্রী।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর বলাশপুর এলাকায় মৃত ওই প্রসূতির জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে ওই দিন ভোরে নগরীর ভাটিকাশর ভেনাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে তড়িঘড়ি করে কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিবিএমসি) পাঠানো হয়। পরে সেখানের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে জানিয়েছেন নিহত নারীর স্বজনেরা।
নিহত নারীর স্বামী মো. মোস্তাকিম বলেন, ‘গত শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ভেনাস হাসপাতালে আমার প্রসূতি স্ত্রীকে ভর্তি করি। এরপর রাত ৮টার দিকে আমার স্ত্রীর সিজার হলে তার খিঁচুনি শুরু হয়। এ সময় আমার স্ত্রীকে আবার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে পেটে রেখে দেওয়া একটি যন্ত্র বের করে চিকিৎসকরা। এভাবে তারা তিনবার অপারেশন করে। এতে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে গেলে সারারাত সে ব্যথায় সটফট করে। এরপর ভোরে আমার স্ত্রীকে ভেনাস হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি বের করে কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (সিবিএমসি) পাঠালে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।’
ভুক্তভোগী স্বামী এ ঘটনার বিচার চেয়ে বলেন, ‘এটি একটি সুস্পষ্ট হত্যাকা-। তারা আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
নিহত নারীর মামি আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা বলেছিল, সব নরমাল আছে। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ভেনাস হাসপাতালের ডাক্তাররা সিজার করে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছে।’
এ বিষয়ে ভেনাস হাসপাতালের পরিচালক আজহার মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না, তবে শুনেছি বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। এতে কত টাকা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’