মেয়েকে মারধরের মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে ফাঁসলেন বাবা সালাহউদ্দিন। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করায় আদালত তাকে এক হাজার টাকা অর্থদ-, অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছেন। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন গতকাল রোববার এই আদেশ দেন। সালাহউদ্দিন তার শ্যালক ও শ্যালকের স্ত্রীসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
মেয়েকে মারধরের অভিযোগ এনে গত ১৫ জানুয়ারি সালাহউদ্দিন আদালতে মামলা করেন। মামলায় তার শ্যালক মো. কাজল, কাজলের স্ত্রী রোকসানা বেগম, মেয়ে কসমিন আক্তার এবং তার দুই স্বজন রবি মিয়া ও আশরাফুলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রবি এবং আশরাফুল দুই ভাই।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সালাহউদ্দিনের মেয়ে তারিনা আক্তার রুমি কসমিন আক্তারের সঙ্গে পড়াশোনার সুবাদে একত্রে চলাফেরা করতেন। কসমিন যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগের পাশের একটা এলাকার ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত ১০ জানুয়ারি রুমি বিষয়টি তার মামা কাজলকে জানিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা তাকে মারধর করে জখম করেন। পরে রুমির মা ও খালা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। এ ঘটনায় রুমির পরিবার থানায় মামলা করতে যায়। তবে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরদিন আদালতে মামলা করেন সালাহউদ্দিন। আদালত মামলা আমলে নেন। পরে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। ওই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, সালাহউদ্দিন ব্রাহ্মবাড়িয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং সেখানকার ডাক্তারি রিপোর্ট দিয়ে মামলা করেন। তবে মামলাটি তদন্ত হয়নি। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরাসরি আমলে নেওয়া হয়। আসামিদের হয়রানি করতে একই ডাক্তারি সার্টিফিকেট দুটি মামলা করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী বাদীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করে আসামিদের অব্যাহতির প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের ভিত্তিতে মামলার মেরিট বিবেচনার প্রার্থনা জানানো হয়।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে পর্যালোচনায় আদালত দেখেন, গত ১৫ জানুয়ারি সালাহউদ্দিন যাত্রাবাড়ী আমলি আদালতে মামলা করেন। আদালত কোনো তদন্ত ছাড়াই অভিযোগ আমলে নেন। সালাহউদ্দিন ১০ তারিখের ঘটনা দেখিয়ে মামলা করেন। কাগজপত্র পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, ভিকটিমের বোন মেহরুন্নেছা সুমি গত ১৪ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল আমলি আদালতে ৭ জানুয়ারির ঘটনা দেখিয়ে মামলা করেন।