হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দেশের ওষুধ শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বাপি) জানিয়েছে, শীর্ষ ৪৫টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে।
অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও ভ্যাকসিনসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে বড় ধরনের ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাপি মহাসচিব ডা. জাকির হোসেন জানান, ১৮ অক্টোবরের অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশের ৩০৭টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ২৫০টি সক্রিয়ভাবে উৎপাদন করছে।
ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে।
বাপির প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, শুধুমাত্র শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির ক্ষতি ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। পুড়ে যাওয়া কাঁচামালের মধ্যে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যান্সার জাতীয় ওষুধ তৈরির উপকরণ। এ ছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পুনরায় আমদানি করতে সময় লাগবে।
ডা. জাকির হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ বর্তমানে ১৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও রয়েছে। কার্গো ভিলেজে আগুনের কারণে উৎপাদন চেইনে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে চীন, ভারত ও ইউরোপ থেকে, যা মূলত আকাশপথে আমদানি করা হয়।
নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদনপ্রাপ্ত পণ্যগুলির পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও অনিশ্চিত। বাপি আশঙ্কা করছে, ক্ষতির প্রভাব শুধু কাঁচামালের মধ্যে সীমিত থাকবে না, বরং পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়াতেও প্রভাব ফেলবে।
ডা. জাকির হোসেন সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে দ্রুত তদন্ত, ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা এবং বিকল্প কার্গো ব্যবস্থাপনা জোরদার করার আহ্বান জানান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন