শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হোছাইন জাহিদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস: ইতিহাস ও তাৎপর্য

হোছাইন জাহিদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

আজ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ছবি- সংগৃহীত

আজ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আজ সারা দেশে বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে ‘সৈনিক-জনতার বিপ্লব’ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি বলে, ওই দিন সশস্ত্র বাহিনী ও সাধারণ মানুষের সংহতির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতি ফিরে আসে এবং সেনা বাহিনীর উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্ত হয়ে দেশের কর্ণধার হিসেবে আবির্ভূত হন।

শুরু কবে থেকে

বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ৭ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়। ১৯৮০-এর দশক থেকে বিএনপি এই দিনটিকে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঐতিহ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

পটভূমি: ১৯৭৫-এর উত্তাল সময়

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হঠাৎভাবে সামরিক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এর পরপরই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে ক্রমাগত অস্থিরতা তৈরি হতে থাকে।

৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা—রাজনৈতিক টানাপোড়েনের নতুন মাত্রা যোগ করে। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন গ্রুপ, গোষ্ঠী ও মতাদর্শিক বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

৬ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ক্ষমতা গ্রহণ করলে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। মূলত এখানেই উত্তেজনার আগুন জ্বলে ওঠে।

জিয়াউর রহমানের ভূমিকা 

মুক্তির পর সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে দ্রুত ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন জিয়া। পরবর্তী দুই বছরে তিনি রাষ্ট্রপতি হন, বহুদলীয় রাজনীতি পুনঃপ্রবর্তন করেন এবং পরে বিএনপি গঠন করেন।

গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার পর জিয়া দ্রুত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন। পরবর্তী দুই বছরে তিনি রাষ্ট্রপতি হন, বহুদলীয় রাজনীতি পুনর্প্রবর্তন করেন, প্রশাসনিক পুনর্গঠন চালান এবং পরবর্তীতে বিএনপি গঠন করেন।

সমর্থকদের দাবি—তার হাত ধরেই বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে সক্রিয় কূটনৈতিক পরিচয় লাভ করে এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী নীতি শূন্যতা দূর হয়।

সরকারি মর্যাদার ওঠানামা

তবে ৭ নভেম্বরকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র মতভেদ রয়েছে।

  • আওয়ামী লীগ এই ঘটনাকে সিপাহি জনতার বিদ্রোহ নয়, বরং সামরিক ক্যু হিসেবে বর্ণনা করে।

  • ইতিহাসবিদদের একাংশ মনে করেন—এটি ছিল সামরিক শক্তি দ্বারা ক্ষমতা পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া।

এ কারণে ৭ নভেম্বরের সরকারি মর্যাদা সময়ের সঙ্গে ওঠানামা করেছে। কিছু সরকার এদিনকে ছুটির দিন করেছিল, আবার অন্য সরকার তা বাতিল করেছে। 

১৯৮০-এর দশকের শুরুতে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ৭ নভেম্বরকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন শুরু করে। সামরিক সরকারের সময় দিনটি সরকারি ছুটির মর্যাদা পায়।
তবে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এদিনের মর্যাদা বাতিল–পুনর্বহাল–আবার বাতিল—এই চক্রের মধ্য দিয়ে গেছে।

তাৎপর্য

সমর্থকদের মতে—

  • সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষের ঐক্য গড়ে ওঠে
  • ক্ষমতার স্থিতিশীলতা ফিরে আসে
  • বহুদলীয় রাজনীতির পথ সুগম হয়

সমসাময়িক বাস্তবতায় দিনের গুরুত্ব

বিএনপি প্রতিবছর আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে দিনটি পালন করে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বরের আলোচনাও নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে, বিশেষ করে বহুদলীয় রাজনীতির কাঠামো, সামরিক প্রভাব এবং ক্ষমতাবিন্যাসের প্রসঙ্গে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!