শনিবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী জামায়াতের এক রাজনৈতিক সমাবেশে বলেছেন, ‘যার যার নির্বাচনি এলাকায় প্রশাসনকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পেছনে পেছনে হাঁটতে হবে, থানার ওসি আপনার প্রোগ্রাম সকালে জেনে নিয়ে আপনাকে প্রটোকল দিবে।’ শাহজাহান চৌধুরীর বিতর্কিত সেই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাতে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদের তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে শাহজাহান চৌধুরীর নাম উল্লেখ না করে বলা হয়, এ ধরনের মন্তব্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পুলিশের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সংগঠন নিয়ে অতিমাত্রায় রাজনৈতিক বক্তব্যের শামিল। রাজনৈতিক এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক ও পুলিশের জন্য হেয়প্রতিপন্ন হয় এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
পুলিশের বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত হয়। গত ১৭ বছরে পুলিশের কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী সদস্যকে ব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। তবে ৫ আগস্টের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশ আগের চেয়ে আরও নিরপেক্ষ ও পেশাদারভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, আসন্ন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ কোনো দল বা মতের পক্ষে অবস্থান না নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দিন শেষ—এখন পুলিশ আইন, বিধি ও জনকল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিতে বিশ্বাস করে।
উল্লেখ্য, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর ওই মন্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে জামায়াতে ইসলামী এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, ওই বক্তব্য একান্তই শাহজাহান চৌধুরীর নিজের এবং এ বক্তব্য জামায়াত সমর্থন করে না।

