ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

আগুনে ঝলসানো মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারিনি

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১১:১৬ এএম
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার। ছবি- সংগৃহীত

পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্রবাসে আছি। শুধু ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছি। ছোটবেলা থেকে মেয়েটার স্বপ্ন ডাক্তার হবে। তাই মেয়েটাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। যাতে মানুষের মতো মানুষ হয়ে মানুষেরই সেবা করতে পারে। আমার সব শেষ হয়ে গেল। আগুনে ঝলসানো আমার নিষ্পাপ সন্তানের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না।

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের কুয়েত প্রবাসী বাবা বনি আমিন।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) চিতলমারী উপজেলার কুনিয়া গ্রামের কওমি মাদ্রাসার কবরস্থানে মেয়ের কবরের পাশে অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি। বাবা বনি আমিনের কান্নায় ভারি হয়ে উঠছিল আকাশ।

নিহত ফাতেমা আক্তার বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কুনিয়া গ্রামের বনি আমিনের মেয়ে। গত সোমবার (২১ জুলাই) যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে মারা যায় সে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফাতেমাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রুপা বেগম। বাবা বনি আমিন নির্বাক চোখে শুধু চেয়ে রয়েছেন মেয়ের কবরের দিকে। অঝোরে কেঁদেই চলেছেন তিনি।

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেরে সোমবার রাতেই কুয়েত থেকে ছুটে এসেছেন দেশে। কিন্তু বাড়িতে এসে মিলল শুধু মেয়ের নিথর দেহ। ফাতেমার শরীরের ৮০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কুনিয়া গ্রামের কওমি মাদ্রাসা কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে শিশু ফাতেমাকে।

ফাতেমার ফুফু ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমার ভাতিজি ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। কালকে দুর্ঘটনার পর আমরা প্রথমে ফাতেমাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না, পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তার মরদেহ পাই।