বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ১০:২৯ এএম

ভারত থেকে হাসিনা-কামালকে ফেরাতে আইনি উদ্যোগে বাংলাদেশ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ১০:২৯ এএম

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ছবি - সংগৃহীত

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ছবি - সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারত থেকে ফেরাতে আইনি উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তারা ভারতে আশ্রয় নেন। ঢাকা–দিল্লির মধ্যকার ২০১৩ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাদের ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নোট ভারবাল বা আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রস্তুত করছে। পাশাপাশি ইন্টারপোলে নতুন নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ বিষয়টি জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ভারতের উদ্দেশে প্রত্যর্পণ চিঠি প্রায় প্রস্তুত এবং তা শিগগিরই পাঠানো হবে। প্রত্যর্পণ অনুরোধের সঙ্গে রায়ের কপি পাঠানো হবে না; নোট ভারবাল হিসেবে পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অনুবিভাগ নথিটির আইনি কাঠামো পরীক্ষা–নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।

অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানিয়েছেন, পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে আগে থেকেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও রেড নোটিশের আবেদন রয়েছে। এখন কনভিকশন ওয়ারেন্ট পাঠিয়ে নতুন করে ইন্টারপোলে নোটিশ চাওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ বা গ্রেপ্তার না হলে দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিলের সুযোগ থাকবে না।

বাংলাদেশ–ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, বিচারাধীন, অভিযুক্ত বা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অন্য রাষ্ট্রে পাওয়া গেলে প্রত্যর্পণ করতে হবে, যদি অপরাধটি দুই দেশের আইনে অন্তত ১ বছরের সাজাযোগ্য হয়।

তবে অনুচ্ছেদ ৬–এ বলা হয়েছে, যদি কোনো অপরাধের ধরন রাজনৈতিক বলে বিবেচিত হয় তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ গ্রহণ নাও হতে পারে। তবে হত্যা, হত্যার প্ররোচনা, অপহরণ, বেআইনিভাবে জিম্মি করাসহ ১৩ ধরনের অপরাধ রাজনৈতিক হিসেবে বিবেচিত হবে না।

চুক্তির অনুচ্ছেদ ৮ অনুযায়ী, যাকে ফেরত চাওয়া হবে তিনি যদি অপরাধের মাত্রা, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় কিংবা অভিযোগটি ন্যায়বিচারের স্বার্থে আনা হয়নি– এসব বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেন তাহলে আশ্রয় দেওয়া রাষ্ট্র প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য নয়।

এদিকে ভারতের কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করছেন, নয়াদিল্লি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করবে না। জিন্দল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, আদালতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত হলেও ভারত কখনোই শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না।

ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘নয়াদিল্লি কীভাবে দীর্ঘদিনের মিত্রকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে?’

তবে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নেতিবাচক সংকেত যেতে পারে বলেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন।

ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয় জানিয়েছে, ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলিপি দ্রুতই স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। দণ্ডিত সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও রায়ের কপি পাবেন। আদালতের চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় নথি প্রস্তুত একদিন দেরিতে শুরু হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও তিনটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে, যেখানে গুম, অপহরণ, হত্যাচেষ্টা ও সহিংসতার নানা অভিযোগ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে তার বিরুদ্ধে মোট ৫৮৬টি মামলা রয়েছে; এছাড়া দুদকের করা ছয়টি মামলাও চলমান।

গত ১৪ বছরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে ১৫৫ জনের সাজা হয়েছে, এর মধ্যে ১০৬ জনের মৃত্যুদণ্ড। পলাতক রয়েছে ৬২ জন। ইন্টারপোলের নোটিশ জারি সত্ত্বেও এদের কাউকেই দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি; অনেকে বিদেশে পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই দিল্লি পৌঁছেছেন। কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের সম্মেলনে যোগ দিতে তার এই সফর হলেও, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ ইস্যু নিয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তার আলোচনা হবে কি না- তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

Link copied!