বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মোস্তফা কামাল

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম

মতামত

রোহিঙ্গা বিষে নীল বাংলাদেশ: কোন পথে সমাধান?  

মোস্তফা কামাল

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম

মোস্তফা কামাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মোস্তফা কামাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কেবল বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় বোঝাপড়া বা কোনো জাদুমন্ত্রে রোহিঙ্গা আপদের সম্ভাবনা নেই। সেই সময়-সুযোগ বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে। আপদের সঙ্গে বিপদ যোগ হওয়ার মতো দিনে দিনে রোহিঙ্গায় যোগ হয়েছে বহুপক্ষ। এ অঞ্চলের ভারত- চীন, বহু দূরের রুশ-মার্কিনসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলের সম্পৃক্ততায় তা বহুমাত্রিক রূপ পেয়েছে।  আর বহুমাত্রিক সমস্যা বহুত্ববাদেই নিস্পন্ন করতে হয়।  এটিই আন্তর্জাতিক কূটনীতির নিয়ম। তা ভালো মতো বুঝেই কক্সবাজারে রোহিঙ্গা অংশীজন সংলাপে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে  সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।  আরো কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বেশ জোর দিয়ে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিপীড়ন ও বাস্তুচ্যুতি থামাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আরো দেরি হলে এ জনগোষ্ঠিটির মাতৃভূমি থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দেবে। বিশ্বসভার কাছে এটি বড় মারাত্মক ম্যাসেজ একজন নোবেল লরিয়েটের।

রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে ড. ইউনূসের দেয়া সাত দফার মধ্যে রয়েছে-রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন, দাতাদের অব্যাহত সমর্থন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির কাছে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিত করার আহ্বান, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ ও অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা, গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি ত্বরান্বিত করা। কক্সবাজারে তিন দিনের ‘স্টেকহোল্ডার্স ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই–লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনটিতে তিনি বলেন, জন্মভূমির প্রতি রোহিঙ্গাদের নাড়ির সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। তাই এখন আর কেবল বক্তব্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এখনই।’

সংলাপটিতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘ প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার কথা ছিল অত্যন্ত পরিস্কার। সেইসঙ্গে নিরেট  বাস্তবতা উপস্থাপন। দাতা ও মানবিক অংশীদাররা তার এ আহ্বান ও বাস্তবতা দৃষ্টে কী পদক্ষেপ নেন সেই অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। কূটনীতি সম্পর্কে ব্যাপক-বিস্তর না জানা মানুষও এতোটুকু উপলব্ধি করছে, অন্তত আসিয়ান ও প্রতিবেশী দেশগুলো আরও সক্রিয় ভূমিকা নিলে রাখাইন ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসতে বাধ্য। সেইসঙ্গে মানব পাচার, মাদক চোরাচালান ও ক্ষুদ্র অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসার মতো আন্তসীমান্ত অপরাধও কমবে। রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান চাইলে এটিকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় নিতেই হবে। গেল রমজানে এ আহ্বান ও সংহতির বার্তা নিয়েই ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে করে কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে একত্রে ইফতার করেছেন। সেটি কেবল স্থানিক নয়, ছিল একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ। গত বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সসম্যা সমাধানে তার তিন দফা প্রস্তাবেও ছিল একই আহ্বান। তার সেই আহ্বানকে স্বীকৃতি জানিয়ে এ বছরের সাধারণ পরিষদে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তা কিছুটা আশাবাদ জাগাচ্ছে।

সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভারে কক্সবাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থীশিবিরে পরিণত করেছে। প্রতিবছর প্রায় ৩২ হাজার নতুন শিশু রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নিচ্ছে। অথচ মিয়ানমারে এখন রোহিঙ্গা সংখ্যা পাঁচ লাখেরও কম। গত আটটি বছর ধরে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ কী যাতনা সইছে, কতো ত্যাগ স্বীকার করছে তার সব খবর গণমাধ্যমে আসছে না। অথচ এ সমস্যার জন্ম বাংলাদেশে, সূত্রপাত মিয়ানমারেই। প্রতিবেশী হওয়াই বাংলাদেশের বড় দোষ। আর দ্বিতীয় দোষ মানবতার দৃষ্টান্ত হিসেবে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া। তাই বলে বাংলাদেশ এখন অমানবিক হয়ে উঠবে? না, মোটেই নয়। এরপরও বাংলাদেশকে পেয়ে বসার অমানবিকার শিকার হতেই হচ্ছে। বাংলাদেশ তাদের পাশে রয়েছে এবং তাদের মাতৃভূমিতে দ্রুত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারাবদ্ধ। তা ড. ইউনূস সব মহলকেই জানিয়ে আসছেন। মার্চে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপস্থিতিতে লাখো শরণার্থীর সামনে তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন রোহিঙ্গারা আগামী রোজার ঈদ তাদের নিজ দেশে অর্থাৎ মিয়ানমারে পালন করবে।

গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকেই রোহিঙ্গারা কমবেশি করে বাংলাদেশে এলেও সবচেয়ে বড় ঢল নামে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। ওই ঘটনার ৮ বছরপূর্তির সময়ও তাদের প্রত্যাবাসনের নিশ্চয়র খবর নেই। বরং আরো হাজারে হাজার অনুপ্রবেশের তোড়জোর সীমান্তের ওপারে।  এরকম বাস্তবতার মাঝেই হলো ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগ।  ২০১৭ সালে যখন জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করল, সেই বছর থেকেই শোনানো হয়েছে মিয়ানমার সরকার ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। শোনা কথা এখনো শোনা আর শোনানোতেই পড়ে রয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি সই করেছিল মিয়ানমার। চুক্তি সইয়ের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া শুরুর কথা ছিল। বাংলাদেশ ২০১৮-২০ সালে ছয় ধাপে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তালিকাও দিয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালে ১ হাজার ১০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সেটিও সফল হয়নি। প্রতি বছর বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং চীন বা আসিয়ানভুক্ত দেশের মধ্যস্থতার আশ্বাস মিললেও কোনো রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি।

বর্তমান সময়টা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রশ্নে একটু বেশি প্রাঙ্গিক। কারণ, ডিসেম্বরে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, যেখানে যাবতীয় চেষ্টা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের, সেখানে উল্টো তৎপরতা এ দেশে আরো রোহিঙ্গা ঠেলে পাঠানোর। এরইমধ্যে নতুন করে আরো কিছু সংখ্যক ঢোকানো হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে অভিযোগ আকারে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২-১৩ লাখ বলা হলেও বাস্তব সংখ্যা যে অনেক বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশাল এ শরনার্থীরা এখন বাংলাদেশের জন্য কেবল বোঝা নয়। আপদের ওপর বিপদের মতো। কারো কারো  ভাষায় ‘বিষফোঁড়া’। কারণ এতে অর্থনৈতিক বোঝার সঙ্গে এখন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তারও সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ। বিষ খেয়ে বিষ হজম করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বন্ধু রাষ্ট্ররা সহযোগিতার বদলে দিচ্ছে এ বিষয়ক পরামর্শ আর তাগিদ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিভিন্ন দেশের কাছে যে সহযোগিতা আশা করা হয়েছিল বাস্তবে তা মেলেনি। কোনো কোনো অসহযোগিতা, এমন কি ভেতরে-ভেতরে চিকন কূটনীতিও করেছে । তাও হজম করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। চলমান বৈশ্বিক স্নায়ুচাপের তাপে তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছরের চেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত বেপরোয়া। তাদের নিয়ে বহু এজেন্ডাও অনেকের। ইন্টারেস্টেড গ্রুপ গজিয়েছে দেশে-বিদেশে। রাজনীতি-কূটনীতিসহ আরো অনেক কিছুর আইটেমে পরিণত করা হয়েছে এ শরনার্থীদের। আশ্রিত-শরনার্থী-অসহায় ইত্যাদি নামে সম্বোধন করা বিশাল এ জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সামনে কী হবে বলা মুশকিল। সামনে মিয়ানমারের ক্ষমতার চিত্র কেমন হবে, তাও প্রশ্ন। কিছু নতুন নিয়োগ ও শীর্ষ পর্যায়ে সামান্য রদবদলে নির্বাচনী আয়োজন চলছে নেপিদোতে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দেশের বহু অঞ্চলে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী যতটা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে বলে দাবি করছে, বাস্তবে তা নয়। তারপরও মিয়ানমারে সামনে একটি নির্বাচন হচ্ছে। আসন্ন এ নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে ক্ষমতার কিছু হেরফের হবে। রোহিঙ্গা বিষয়ে সেই সরকারটির মনমর্জি কেমন হবে, সেই অপেক্ষা করতে চান অনেকে। মিয়ানমারের নির্বাচন পূর্ববর্তী চলমান অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রশ্নে থেকে বাংলাদেশ কোনো সুযোগ নিতে পারে কি-না, এ আলোচনাও আছে। এ মহলটি একটু পেছনে তাকাচ্ছে। কারণ বাস্তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলেও ২০২২-২৩ সালে মিয়ানমার থেকে এ বিষয়ে যৎকিঞ্চিৎ উদ্যোগ তথা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও ক্যাম্প পরিদর্শন হয়েছিল। কিন্তু, সেটার ফলো আপ থাকেনি।

মিয়ানমারে যে দীর্ঘ সময় নিয়ে যুদ্ধ চলছে, তা দেশটির ইতিহাসে আর কখনোই চলেনি। সংঘাতময় এ পরিস্থিতির গোড়ার দিকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী  বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য এটা উপযুক্ত সময় নয়। তখন চীনা রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেছিলেন, বেইজিং যেভাবে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার ব্যাপারে কাজ করছে, তা শিগগিরই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দরজা উন্মোচন করবে। কিন্তু, বাস্তবে দরজা আরো সংকীর্ণ হয়েছে। ততক্ষণে আরো অনেক দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গা ইস্যুতে জড়িয়ে গেছে। পুরো বিষয়টি হয়ে গেছে বৈশ্বিক আইটেম। এখন মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে কিছুটা ভিন্নতা। বাংলাদেশ-সংলগ্ন মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা দখলের পর এই আরাকান আর্মি এখন অনেকাংশে বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। সীমান্ত এলাকার শৈথিল্য ও কঠোরতা সাপেক্ষে স্থলবেষ্টিত অবস্থায় তারা নিজেদের মৌলিক প্রয়োজন ও সম্ভাব্য কৌশলগত সামগ্রীর জন্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা সামগ্রীর ওপর তারা নির্ভর করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৌশলী যোগাযোগের জন্য এটি একটা উত্তম সময়। আর এ সময়েই কক্সবাজারে হয়ে গেল অংশীজন সম্মেলনটি। যা আশাবাদে কিছুটা টোকা দিয়েছে।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন

Link copied!