আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট গঠনের তৎপরতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আদর্শগত পার্থক্য ও পুরোনো দ্বন্দ্ব থাকলেও জোটের একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে দলগুলো ‘এক বাক্সে ভোট’ স্লোগানে ঐক্য-প্রচেষ্টায় নেমেছে।
বিশেষ করে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক পাঁচটি দল একটি নির্বাচনী জোট গঠনের লক্ষ্যে আলোচনায় ব্যস্ত।
এদিকে, বড় ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে অন্যান্য ইসলামপন্থি দল। একইসঙ্গে বিএনপিও ইসলামি দলগুলোকে নিজেদের দিকে টানার কৌশলে সক্রিয় রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেষ পর্যন্ত দলগুলো কার সঙ্গে সংহতি গড়বে- তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে ইসলামপন্থি রাজনীতির ভবিষ্যৎ মেরুকরণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে জোর আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থান দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়ার পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামপন্থি দলের রাজনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে।
বিভিন্ন সময় দলগুলো নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এদিকে, নির্বাচনকালীন সরকার ও সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গে জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামপন্থি দলের ভিন্নমতের দৃষ্টান্তও রয়েছে।
কেউ কেউ মনে করছেন, এসব অবস্থান দলগুলোর মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করতে পারে।
ইসলামি দলের নেতারা বলছেন, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরির সুযোগ এসেছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে তারা ইসলামপন্থিদের ঐক্যবদ্ধ জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন।
তবে বাস্তবতা ভিন্ন বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, দলগুলোর ভিন্ন আদর্শ, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা এবং রাজনৈতিক কৌশলে ভিন্নতা বৃহৎ ঐক্য গঠনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এরই মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত দুই প্রধান বিরোধী শক্তি ইসলামি দলগুলোকে নিজের দিকে টানতে তৎপর। এ পরিস্থিতিতে ইসলামপন্থি দলগুলোর একটি অংশ বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে, অপর অংশ জামায়াত ঘনিষ্ঠ বলয়ে যুক্ত হতে পারে এমন মনে করছেন সংশ্লিষ্ট নেতারাও।
ফলে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, দলগুলো ততই স্পষ্ট মেরুকরণে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একদিকে ঐক্যের চেষ্টা, অন্যদিকে আদর্শগত ও কৌশলগত দূরত্ব- এই দ্বৈত বাস্তবতা এখন ইসলামপন্থি রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: বিবিসি