আসনের সীমানা নির্ধারণের কারণে অনেক সময় নির্বাচনের ফল ভিন্ন হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কমিশনের আলোচনার প্রথম ধাপ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংসদীয় আসনের সীমান নির্ধারণের জন্য একটি বিশেষায়িত কমিটি হবে উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, ‘স্বচ্ছ, সুন্দর ও সঠিকভাবে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করার জন্য এটি খুবই জরুরি বিষয়। কারণ এটার কারণে নির্বাচনের ফল ভিন্ন হয়ে যায় অনেক সময়।’
এ সময় তিনি প্রতি আদমশুমারির পর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে একটি সাংবিধানিক বিশেষায়িত কমিটি গঠনের বিষয়ে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলেও জানান।
তিনি বলেন, ‘আজ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আগে নির্বাচন কমিশনই একান্তভাবে কাজটি করত। এখন স্বচ্ছতার জন্য একটু পরিবর্তন আনার কথা বলা হচ্ছে। সেটা হচ্ছে, একটি বিশেষায়িত কমিটি হবে।’
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেই কমিটি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা ও সুপারিশ করবে। এটিকে দুইভাবে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম হচ্ছে, সামনে যে জাতীয় নির্বাচনটি হবে, এতে আমাদের বা কমিশনের প্রস্তাব ছিল—একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হবে ইসির অধীনে।’
‘যেহেতু এবার সময় কম, এর মধ্যে ভিন্ন কোনো চিন্তা করার সুযোগ নেই। সে জন্য ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে ইসি, তাদের সুপারিশক্রমে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হবে।’
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সীমানা নির্ধারণের জন্য অনেক বিশেষজ্ঞের কাজ করতে হয়। জরিপের কাজ, ভৌগোলিক অঞ্চলকে সমন্বয়, ভোটের আনুপাতিক দিকগুলো আছে—এমন অনেক বিষয়ে। সবকিছু বিবেচনা করে এটি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে।’
‘আর স্থায়ীভাবে আরেকটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি, সংবিধানে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির বিষয়ে উল্লেখ থাকবে। আদমশুমারির পরপরই সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকবে। তারা একটি সাংবিধানিক কমিটি হিসেবে কাজ করবে, সংবিধানে তাদের কথা উল্লেখ থাকবে।’
জামায়াতের এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘এই কমিটি স্বাধীন হবে। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে এটি গঠিত হবে। কমিশন প্রস্তাব করেছিল—এটির নামের শেষে ‘কমিশন’ হবে। এ নিয়ে অনেকে আবার আপত্তি করেন। যে কারণে, নামের শেষে ‘কমিটি’ দিয়েই সবাই ঐকমত্য হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীন কমিটি হিসেবে সংবিধানে এটি সংযোজিত করার বিষয়েও বিএনপি রাজি হয়েছে। আমরাও এখানে কম্প্রোমাইজ (আপস) করেছি। আমরা ‘কমিশনে’র জায়গায় ‘কমিটি’ মেনে নিয়েছি। দুটো প্রধান দলই ছাড় দিয়ে একটি ঐকমত্যে আসার পর বাকিরা রাজি হয়েছেন।’
আপনার মতামত লিখুন :