ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার তসলিমা নাসরিনের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:০৬ পিএম
শেখ হাসিনা ও তসলিমা নাসরিন। ছবি- সংগৃহীত

জনরোষের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতে নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। টানা ৪৪ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা হাসিনাকে অবসর নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভারতের ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা মডেলে’ ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনার বিষয়টির বিরোধিতা করেছেন তসলিমা নাসরিন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিসিসি বাংলার নিউজ কার্ড শেয়ার করা পোস্টে তসলিমা লিখেছেন, ‘এদের শিক্ষা হয় না। এখনো ডাই-ন্যাস্টি পলিটিক্স ছাড়া কিছু ভাবতে পারে না। উপমহাদেশটা এ কারণে অন্ধকারে পড়ে আছে। আরে বাবা, তোমার ছেলেমেয়েরা রাজনীতির কী বোঝে যে তাদের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আনতে হবে’?

তিনি আরও লেখেন, ‘অতীতে কী কী ভুল করেছেন তা এখনো স্বীকার করেননি ম্যাডাম। ভুল সংশোধন করার কোনো তাগিদও নেই। আবারও নতুন ভুলের দিকে যাত্রা করেছেন। আওয়ামী লীগে যাঁরা সৎ, নিষ্ঠ, যাঁরা রাজনীতি বিশেষজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, তাঁদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে আপনি অবসর নিন।’

পোস্টে তিনি শেখ হাসিনাকে ‘কওমি মাতা’ আখ্যা দিয়ে তার কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, শেখ হাসিনা অবাধে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়েছেন, ধর্মান্ধতা ছড়িয়েছেন, এবং তাঁর সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ সন্তানেরাই তাঁকে ঢাকার মসনদ থেকে উৎখাত করেছেন। আজ যদি তার সন্তানেরা শরিয়া আইন নিয়ে আসে, মানবাধিকার এবং নারীর অধিকারের তিলমাত্র যদি কিছু না থাকে, তার দায় কওমি মাতা হাসিনারই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘শেখ মুজিবর রহমানের কোনো একটি আদর্শও শেখ হাসিনা মানেননি। দেশজুড়ে তিনি তার পিতার ভাস্কর্য গড়েছেন, কিন্তু তার পিতার গড়ে তোলা সংবিধান মানেননি। যে চারটে স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন তার পিতা, তা আর কেউ উপেক্ষা না করলেও শেখ হাসিনা করেছেন। বুদ্ধির মুক্তির জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান বিখ্যাত ছিল, সেসবকে ধর্মের অন্ধকার কূপ বানিয়ে ছেড়েছেন।’ 

তিনি লেখেন, শেখ হাসিনা আমার বিরাট অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছেন। আমাকে তিনি আমার পৈতৃক সম্পত্তির কানাকড়িও পেতে দেননি। সম্পত্তি পেতে হলে আমাকে দেশে উপস্থিত থাকতে হবে অথবা দেশের কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে হবে, যে আমার হয়ে সম্পত্তি বুঝে নেবে অথবা বিক্রি করবে। আমাকে যেহেতু শেখ হাসিনা দেশে ঢুকতে দেননি, আমি আমার বোনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছিলাম। পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ডকুমেন্ট বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হয়। তবে শেখ হাসিনার নির্দেশে বা ভয়ে দূতাবাসের কেউ তার পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সত্যায়িত করেননি।