শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০২:২২ পিএম

কেউ কেউ বলছেন আমি ‘ভাইয়ের রক্ত বেচে খাচ্ছি’: মীর স্নিগ্ধ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০২:২২ পিএম

মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, এই সমালোচনায় রাগ না হয়ে বরং তিনি ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছেন। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা লিখেছেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত মীর মুগ্ধর ভাই মীর স্নিগ্ধ লিখেছেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমি আপনাদের অনেক কমেন্ট পড়ছি। সব কমেন্ট। বিশ্বাস করুন, একটাও বাদ দেইনি। অনেকে আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন প্রাণ উজাড় করে, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাহস জুগিয়েছেন প্রতিনিয়ত, এই মানুষগুলোর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আবার অনেকেই ঝাড়ছেন রাগ। কেউ লিখছেন আমি ভাইয়ের রক্ত বেচে খাচ্ছি, কেউ বলছেন অযোগ্য, কেউ বলছেন ক্ষমতার লোভী।’

তিনি লিখেছেন, ‘সত্যি বলি? আপনাদের এই কথাগুলো পড়ে আমার একটুও রাগ হয়নি। বরং অদ্ভুত একটা ভালোলাগা কাজ করেছে। অবাক হচ্ছেন? ভালো লেগেছে কারণ, এই যে আপনারা আমাকে বকাবকি করছেন, শাসন করছেন। এটা তো আপনারা তাকেই করেন যাকে আপনারা নিজের ভাবেন। পর ভাবলে তো কবেই ভুলে যেতেন। আপনারা মুগ্ধকে ভালোবাসেন, তাই আমাকে নিয়ে আপনাদের এত ভয়, এত কনসার্ন। আমি যদি পথভ্রষ্ট হই, সেই ভয়েই আপনারা আমাকে বকা দেন। এই রাগটা আসলে আপনাদের ভালোবাসা, আমি এভাবেই দেখি।’

মীর স্নিগ্ধ লিখেছেন, ‘আমি তো রাজনীতিবিদ হয়ে জন্মাইনি। কয়েক মাস আগেও আমি আপনাদের মতোই সাধারণ একটা ছেলে ছিলাম। আমারও স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে নিজের মতো ক্যারিয়ার গড়ব, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেব। কিন্তু জুলাইয়ের সেই দিনটা... সেই একটা গুলি আমার, আমাদের পুরো পরিবারের সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে।’

তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা যখন বলেন আমি ভাইয়ের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করছি, তখন বুকের ভেতরটায় কেমন লাগে জানেন? মনে হয়, এর চেয়ে যদি ওই গুলিটা আমাকে লাগত, হয়তো ভালো হতো। আপনারা যখন প্রশ্ন তোলেন আমার উদ্দেশ্য নিয়ে, তখন বুকের ভেতরটায় কেমন লাগে জানেন? মনে হয়, বেঁচে থাকাটাই মাঝে মাঝে অপরাধ।’

মীর স্নিগ্ধ লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতিতে কেন এলাম? শখ থেকে? বিশ্বাস করুন, রাতের পর রাত ঘুমহীন কাটানোর পর, শত শত আহত ভাইদের আর্তনাদ শোনার পর, আমি বুঝেছি, শুধু কান্না দিয়ে বিচার পাওয়া যায় না। বিচার পেতে হলে, এই সিস্টেমটাকে বদলাতে হলে, আমাকে সেই জায়গায় যেতে হবে, যেখানে আইন তৈরি হয়।’

তিনি লিখেছেন, ‘আমি জানি আমি অভিজ্ঞ নই। আমি পাকা পলিটিশিয়ানদের মতো গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারি না, অনেকসময় সত্যটাও হয়তো মুখ ফুটে তুলে ধরতে পারি না। আমি ভুল করব, হয়তো হোঁচট খাব। আমি তো সুপারম্যান নই, আমি আপনাদের মতোই রক্ত-মাংসের মানুষ। আমার ভুল হবে। আমি জানি।’

‘কিন্তু একটা কথা দিচ্ছি, আমার ভুল হলে আপনারা এভাবেই আমাকে শাসন করবেন। গালি দেবেন, কান ধরে সঠিক রাস্তায় আনবেন। আপনাদের এই অভিমানমিশ্রিত কমেন্টগুলো আমার জন্য রিমাইন্ডার, যে আমার পিছু হটবার সুযোগ নেই।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিখেছেন, ‘যারা আমাকে ভালোবাসেন, আর যারা আমাকে এখন ঘৃণা করছেন, আপনারা সবাই আসলে একই জিনিস চান। আপনারা চান মুগ্ধর আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়। আমিও ঠিক সেটাই চাই।’

‘আসুন না, আমার প্রতি আপনাদের অভিমানের এনার্জিটাকেই আমরা দেশ গড়ার কাজে লাগাই। আমি আপনাদের নেতা হতে আসিনি, আমি এসেছি আমার, আপনার হারিয়ে ফেলা ভাইয়ের আর বোনের শুরু করে রেখে যাওয়া নতুন এক যাত্রার যাত্রী হতে, যে পথের যাত্রী আপনি, আমি, আমরা সবাই। আমি থাকব। সব গালি সহ্য করে, সব অপমান মেনে নিয়ে—আমি শেষ পর্যন্ত থাকব। কারণ আমি হেরে গেলে, আপনি হেরে গেলে, আমরা হেরে গেলে, হেরে যাবে মুগ্ধ, হেরে যাবে আবু সাঈদ, হেরে যাবে জুলাই। সাথে থাকবেন তো? দেখেন না একবার বিশ্বাস করে, পাশে দাঁড়িয়ে।’

Link copied!