ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সোমবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটি ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন (ব্রিফিং) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তার সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন শামা ওবায়েদ।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তৎপরবর্তী যে প্রতিক্রিয়া এবং পরিস্থিতি, এবং তার সঙ্গে বাংলাদেশ এবং বিলেতের (যুক্তরাজ্য) যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক, এবং পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং বিলেতের মধ্যে যে ভবিষ্যৎ, যে সংযোগ এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা কী হতে পারে, এবং সর্বশেষ বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক, যে জিওপলিটিক্যাল অবস্থান, সে প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এবং তার পার্শ্ববর্তী দেশ সমূহের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, সে সবকিছু নিয়ে বিস্তৃত দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।
ড. আবদুল মঈন খান আরও বলেন, আমাদের মহাসচিব সাহেব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) এই আলোচনার নেতৃত্ব দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা করছেন একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে ড. আবদুল মঈন বলেন, নির্বাচন নিয়ে তো আপনারা জানেন যে, কথা এখন একটাই। এটা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের মানুষের যে ইচ্ছার প্রতিফলন, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম যারা দীর্ঘ সতেরো বছর তাদের ভোট দিতে পারেনি, এবং চিন্তা করে দেখুন ২০০৮ সালে যারা সতেরো বছর বয়সের ছিল, তৎপরবর্তী ২০২৪ সালের আগস্টে এসে তাদের বয়স কত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু বলবে, আমি ভোট দিতে চাই, না খেয়ে থাকলে অসুবিধা নেই। এটাই বাংলাদেশের মানুষের রক্তের ভেতরে আছে। কাজেই ভোটের ব্যাপারে একটা নিশ্চিত ইঙ্গিত যখন সরকারের পক্ষ থেকে আসে, যখন বলা হয় যে নির্বাচন কমিশন দেশবাসীকে ভোটের তারিখ জানাবে, তখন তো বাংলাদেশের মানুষ উৎফুল্ল হয়ে যায়।
বাংলাদেশের মানুষ উৎসবমুখর ভাবে ভোট দিতে চায়। আমরা যেমন বৈশাখ মাসে ১৪ই এপ্রিল নববর্ষের উৎসব করি, বাংলাদেশের মানুষের কাছে কিন্তু ভোটের দিনটিও এরকম একটি উৎসবের দিন।
কাজেই তারা উন্মুখ হয়ে আছে, কখন ভোট দেবে, কখন তাদের যে মৌলিক অধিকার, তারা সেটা প্রয়োগ করবে, এবং তাদের সত্যিকার যে প্রতিনিধি তাদেরকে নির্বাচিত করবে।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা যেটা আলোচনা করেছি যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যখন পুরোপুরি একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে, এদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তখন বিলেতের (যুক্তরাজ্য) সঙ্গে আমরা ভবিষ্যতে কোন কোন বিষয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমকে, সেগুলো আমরা জোরদার করতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেমন- আলোচনা হয়েছে শিক্ষা নিয়ে। আপনারা জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একসময় বলা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড।
সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান কর্মসূচি আজকে কোথায় গিয়েছে, আপনারা সবাই জানেন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা সেই অতীত ঐতিহ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি।
আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি, এবং আমাদের বিশ্বাস, আগামীতে আমাদের দেশের যে তরুণ ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছে, তারাও যেন বিলেতে গিয়ে স্কলারশিপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং গ্রহণ করে যেন সেখানে থেকে না যায়, এ কথাটিও আলোচনায় এসেছে। তারা যেন দেশে ফিরে দেশকে সেবা দেয়, সেই বিষয়গুলো কিন্তু আমরা গুরুত্বের সাথে আলোচনা করেছি।’
দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান ড. আবদুল মঈন খান জানান, বিলেত এবং বাংলাদেশ পারস্পরিক যে উন্নয়নের জন্য, বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নয়নের জন্য আমরা কী কী কাজ করতে পারি, সে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
তারপরে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আরও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ব্যবসার মালিকদের কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেটা আমরা বলেছি। বিলেতের গণতন্ত্রের মডেল ওয়েস্ট মিনিস্টার মডেলে গড়ে উঠেছে।
আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের বিলেত থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আজকের আলোচনায় এটা এসেছে যে, এই যে বাংলাদেশের যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো, তারা বলেছেন সেগুলো গড়ে তোলার ভবিষ্যতে তারা সানন্দে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
আপনার মতামত লিখুন :