বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের শপথ নিতে হবে, কোনোদিনই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেব না। আমরা কারও কাছে মাথা নত করব না। আমরা আমাদের দেশকে নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তুলব।’
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপির মাসব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সব মানুষ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। আর এই নির্বাচনের আগেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের লোকজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে বসে তারা দেশের মধ্যে যড়যন্ত্র করছেন। তাদের সেসব যড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নতুন একটা সূর্য উঠেছে। এই সূর্য আলোকিত করবে আমাদের সকলকে। প্রিয় ছাত্র ভাই ও বোনেরা, আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে নতুন করে বাংলাদেশকে নির্মাণ করার।’
সমাবেশে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজ আমাদের অনেক আনন্দের দিন। আবার একইসঙ্গে কষ্টে দিন। এক বছর আগে একই দিনে আমরা অনেক ছাত্র ভাই-বোনকে হারিয়েছি। শুধু ৩৬ দিন নয়, এর আগেও অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন। এই যে প্রাণ দেওয়া, এই যে ত্যাগ, এর উদ্দেশ্য একটাই—গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টায় লন্ডন থেকে অনলাইনে সমাবেশে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দুপুর ৩টার দিকে মঞ্চে উপস্থিত হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে থেকেই সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ ছাত্রদলের সাবেক নেতারা।
এরপর কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান। এর আগে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বিগত ১৫ বছরে বিভিন্ন আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও শুরু হয়, তবে বৃষ্টিতে দমে না গিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্লোগান, মিছিল ও ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হন শাহবাগ এলাকায়।
বাস বা পিকআপ দূরে থামিয়ে রেখে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছান নেতাকর্মীরা। তাদের প্রায় সবার মাথায় ব্যান্ড, হাতে জাতীয় পতাকা ও ছাত্রদলের পতাকা। তারা স্লোগান দেন, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই’ প্রভৃতি।
আপনার মতামত লিখুন :