বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

‘ইতিহাসে প্রথমবার ভীরু নারী হিসেবে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন হাসিনা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

ময়মনসিংহে গণঅভ্যুত্থানের বিজয় মিছিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহে গণঅভ্যুত্থানের বিজয় মিছিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনা কাপুরুষের মতো ভীরু নারী হিসেবে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। এর আগেও আরও অনেক সরকারের পতন হয়েছে, কিন্তু কেউ পালিয়ে যাননি।’

বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল চত্বরে ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির যৌথ বিজয় মিছিল-পূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রবীণ এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের লড়াইয়ের ফসলের পূর্ণতা পাওয়ার সময় এসেছে। আমরা লড়াই করেছি ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য। আন্দোলন করেছি, যাতে তাদের পতনের পর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। নানাভাবে এই প্রয়াসকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের লড়াইয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে।’

তিনি বলেন, ‘লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আমাদের লড়াই শুধু ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য ছিল না, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যও ছিল। এ জন্য আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলেছি। অনেকেই নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা ক্রমাগত বলে এসেছি, আমরা জনগণের শাসন চাই। আমরা এমন সরকার চাই, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি করবে—এমন একটি গণতান্ত্রিক সরকার।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গতকাল (৫ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছেন। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি লন্ডনের মিটিংয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে যে কথা দিয়েছিলেন, তা রেখেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন না, কারণ আইনে এই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তিনি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবেন। আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যে বিজয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন করছি, তা এমনিতেই আসেনি। এই বিজয় এসেছে সকলের সমবেত চেষ্টায়। দীর্ঘ ১৬ বছর আপনারা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবিরাম লড়াই করেছেন। এই লড়াইয়ে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, শত শত নেতাকর্মী খুন হয়েছেন, অনেকেই পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছেন। লাখো নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘সবাই কোনো না কোনোভাবে বিগত সরকারের আমলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরও কেউ লড়াইয়ের ময়দান পরিত্যাগ করেননি। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকেছেন, আর সে কারণেই ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই ও মাগফিরাত কামনা করি। যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের গণতন্ত্রের লড়াইয়ে যারা আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন, কারাবন্দি হয়েছেন তাদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা। এই লড়াইয়ে অনেক মা সন্তান হারিয়েছেন। তাদের একজন আমাদের মা, বেগম খালেদা জিয়া। তিনি এই লড়াইয়ের সময় এক পুত্রকে হারিয়েছেন। তিনি বিদেশে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ভাই তার ভাইকে হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। তিনি তার ভাইকে হারিয়েছেন। অনেকেই কারাবন্দি হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম আমাদের নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যাকে মিথ্যা অভিযোগে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। সেখানে ভুল চিকিৎসা করে তাকে অসুস্থ বানিয়ে ফেলা হয়েছে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে, তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হলে বিএনপিকে নির্বাচিত করতে হবে। আর এই নির্বাচনে বিজয়ের একমাত্র মূল অস্ত্র হচ্ছে—জনগণের হৃদয় জয় করা, জনগণের ভালোবাসা ও তাদের সমর্থন অর্জন করা। তাই আজকের এই দিনে শপথ নিন—আমরা কেউ এমন কাজ করব না, এমন কথা বলব না, যাতে জনগণ কষ্ট পায়।’

সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিজয় মিছিল নগরীর টাউন হল থেকে শুরু হয়ে স্টেশন রোড চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এতে ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

Shera Lather
Link copied!