বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের আস্থা পুনর্গঠনই এখন তাদের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক অঙ্গীকার।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি দলের বর্তমান কার্যক্রম, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার কৌশল তুলে ধরেন।
তারেক রহমান লেখেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা ফিরিয়ে আনা। এ জন্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। গ্রাম, উপজেলা, জেলা এবং মহানগর পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সরাসরি মানুষের কাছে যাচ্ছেন, তাদের সমস্যার কথা শুনছেন এবং সমাধানে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
তিনি জানান, দলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অসদাচরণ ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাত হাজারের বেশি সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কেউ পদচ্যুত হয়েছেন, কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন। তারেক রহমান বলেন, বহুমুখী অপপ্রচারের মধ্যেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, কিন্তু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এগুলো অপরিহার্য। শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সেটিই আমাদের শক্তি।
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি চায় এমন এক রাজনীতি যেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিকে ক্ষমতার খেলা হিসেবে নয় বরং সবার অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্র হিসেবে দেখবে।
তারেক রহমান লিখেছেন, সময়ের চাহিদা মেনে বিএনপি নিজেদের আধুনিকায়ন করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে দলের নীতিমালা সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চাই বিএনপির পরিচয় হোক সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে; বিভাজন বা সুবিধাভোগের প্রতীক নয়।
তিনি আরও লিখেছেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস থেকেই বিএনপি অনুপ্রেরণা নেয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখন সময় নতুন যুগের সূচনা করার, যেখানে তরুণ নেতৃত্ব, সততা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হবে রাষ্ট্রগঠনের মূলভিত্তি।
তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকি এবং জনগণের সেবায় নিজেদের সম্পূর্ণভাবে নিয়োজিত করি। আমি যেমন আপনাদের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ হবে আরও উজ্জ্বল।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।