ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় শিশুপার্কটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডা ও গোচারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা সদরে থানার পাশে অবস্থিত এই পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, পার্ক সীমান্ত এলাকায় চুরি, জুয়া, মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি হরিপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ওজুখানা থেকে কয়েক দিনের ব্যবধানে দুটি পানির পাম্প চুরির ঘটনাও ঘটেছে।
শিশুপার্কের চারদিকে কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠে অবাধে গরু-ছাগল চরানো হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয়দের নিয়মিত যাতায়াত থাকলেও রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে জমে ওঠে মাদকসেবীদের আড্ডা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পার্কে নিয়মিত টহল বা নজরদারি না থাকায় এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ছে।
দীর্ঘদিন ধরে শিশুপার্কের অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ না থাকায় এর পরিবেশ এখন বেহাল। শিশুদের খেলাধুলার সরঞ্জামগুলো নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার পর পার্ক এলাকায় শুরু হয় মাদক বিক্রি, অথচ পার্কের পাশে কোনো পুলিশি অভিযান চোখে পড়ে না। দ্রুত প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধি ও পার্ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলা প্রশাসন শিশুপার্ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের শেষের দিকে পার্কটি চালু হয়। এ সময় প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করা হয় পার্কটি নির্মাণে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘পার্কটির যখন কাজ শুরু হয় তখন খুব আশান্বিত হয়েছিলাম যে, আমাদের এলাকার শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য ভালো কিছু একটা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে এর পরিবেশ শিশুদের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। বখাটেদের উৎপাত, মাদক সেবন, ইভটিজিং সবই চলে এখানে। এসব বন্ধ করে পার্কটি শিশুদের জন্য বিনোদনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
হরিপুর থানার ওসি জাকারিয়া মন্ডল বলেন, ‘পার্কে একাধিকবার অভিযান করে মাদকসহ আসামি ধরা হয়েছে। মাদক প্রতিরোধে আমাদের অভিযান চলমান। তবে আমরা এখন থেকে সেখানে আরও তৎপরতা বাড়াব।’
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘শিশুপার্কের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


