বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিউইয়র্কে কেউ লাঞ্ছিত করেনি বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে যে ধরনের প্রচার চলছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পিরোজপুর জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন রিজভী।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নিউইয়র্কে যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দক্ষতা ও দৃঢ়তা দেখাতে পারত, তাহলে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’রা এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পেত না। সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব অপশক্তি দেশে-বিদেশে সক্রিয় হয়ে উঠছে।
রিজভী আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’দের কোনো ধরনের সম্পর্ক বা আঁতাত নেই। তিনি শেখ হাসিনাকে ‘ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের প্রতীক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, দেশে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাস্টারপ্ল্যান চলছে।
দুদকের অকার্যকারিতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির সিনিয়র এ নেতা। তার দাবি, আদালত থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে ২৪ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা উদ্ধারের নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
রিজভী আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর তারেক রহমান জাতীয়তাবাদী পতাকা হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি শুধু দেশীয় রাজনীতি নয়, প্রবাসে থেকেও সংগঠনকে সুসংগঠিত করেছেন এবং তরুণ প্রজন্মকে গণতন্ত্রের সংগ্রামে সম্পৃক্ত করেছেন।’
রিজভী জানান, তারেক রহমান আন্দোলনের সময় তরুণদের সামনে নেতৃত্বের যে উদাহরণ স্থাপন করেছেন তা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন প্রজন্মকে প্রেরণা জোগাবে। এমনকি সেই দৃশ্য, সেই ইতিহাস কোনো দিন মুছে যাবে না।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নতুন নেতারা জনগণের আস্থা অর্জন করবে। সেই আস্থার ভিত্তিতেই মানুষ ধানের শীষে ভোট দেবে।’
বিএনপির এই নেতা শেখ হাসিনাকে ‘ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের প্রতীক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছেন।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘যার প্রতি সব গণতান্ত্রিক শক্তির সমর্থন রয়েছে, তারা যদি আরও দক্ষতা দেখাত, তাহলে নিউইয়র্কে ফ্যাসিবাদের দোসররা সাহস করে সেই অপকর্ম চালাতে পারত না।’
এ সময় বরগুনা ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এক এক করে তাদের নাম উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এই নেতারা আন্দোলন-সংগ্রামে আপসহীন থেকেছেন। পুলিশের নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্যেও তারা রাজপথে সক্রিয় ছিলেন।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘তাদের নেতৃত্বে বরগুনা ও পিরোজপুর জেলা বিএনপি একটি আদর্শ সংগঠনে পরিণত হবে। কোনো চাঁদাবাজ, দখলদার বা সমাজবিরোধী সেখানে আশ্রয় পাবে না।’